reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জানুয়ারি, ২০২২

মেয়রের উন্নয়ন ভাবনা

উন্নয়নে সাজবে শহর

ভৌগোলিক দিক থেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই পৌর শহরের প্রতিটি বাড়িতে সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জিওবি, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআিইবি) অর্থায়নে ১৮ মাসের মধ্যে কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথমপর্যায়ে পানি সরবরাহ কাজে ব্যয় হবে ১০ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৪ টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৬২১ মিটার ড্রেনও নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ শহরের অগ্রযাত্রায় আরো কী কী কর্মপরিকল্পনা নেওয়া যায় সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। এই শহরকে সাজাব উন্নয়ন দিয়ে। প্রতিদিনের সংবাদকে কথাগুলো বলছিলেন বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ইশরাত জাহান চৌধুরী।

বড়লেখা পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠা হয় ২০০১ সালের ১৪ জুন। গ্র্রামনির্ভর এই পৌরসভাটি ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। এর আয়তন প্রায় সাড়ে ১১ বর্গকিলোমিটার। ২০০৪ সালে পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। এর ভোটার ১৫ হাজার ৪৪৩ জন। ২০০২ সালের মধ্যভাগে এ পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন হয়। ২০১৫ সালের শেষ দিকে তৃতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর চতুর্থ নির্বাচনেও টানা দ্বিতীয়বার জয়লাভ করেন তিনি।

মেয়র আবুল ইমাম চৌধুরী বলেন, ‘পৌরসভার সব সমস্যা সীমিত সময়ের মধ্যে সমাধান করা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হলেও আমি ২০১৫ সাল থেকে তিন অর্থবছরের মধ্যেই বড়লেখা পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হতে কাক্সিক্ষত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে। তা ছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন।’

পৌরসভার স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য বহু আগে জমি কেনা হলেও বিগত সময়ে পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে তা জেলা প্রশাসকের নামে চলে যায়। বর্তমানে পৌরসভার নামে আনতে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত রাজস্ব মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এই নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করা বর্তমানে পৌরসভার পক্ষে সম্ভব নয় বিধায় প্রতীকী মূল্যে তা দিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত তা বাস্তবায়ন হবে।

মেয়র বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ষাটমা ছড়া, নিকলীছড়া, লংলীছড়া ও ধামাইছড়া খননের ফলে শহরে জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে বড়লেখা পৌরসভাটি অনেকটা ব্যতিক্রম। পাহাড়ি, সমতল ও হাওরনির্ভর এই পৌরসভাটি পাশের এলাকা ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জীর নিকটবর্তী থাকার কারণে বৃষ্টিপাত ও ভারী বর্ষণের স্বীকার হয়। পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের রাস্তার অনেক ক্ষতি হয়। তা ছাড়া খাল ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে আমার বিশেষ প্রচেষ্টায় ও বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) সহযোগিতায় পৌর শহরকে অকালবন্যার হাত থেকে রক্ষায় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা নির্মাণ করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ খালসমূহের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হবে। পর্যাপ্ত ড্রেনেজব্যবন্থা ও পয়োনিষ্কাশনের পরিকল্পিত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। শহরের ময়লা-আবর্জনা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের লক্ষ্যেও কাজ চলছে।’

মেয়র বলেন, ‘আমার গৃহীত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-পৌরসভাপর্যায়ে সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করা, পৌরসভাকে ক শ্রেণিতে উন্নীত করা, পৌর ভবনের জায়গার ব্যবস্থাসহ অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করা এবং পৌর প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’

পৌরকর সহনীয় পর্যায়ে রাখার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে মেয়র কামরান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ট্যাক্স কিছুটা বাড়ানো হলেও সব ক্ষেত্রেই পরিমাণ কম। এখানে কর আদায়ের কোনো নীতিমালা ছিল না। এখন নীতিমালার আওতায় কর আদায় হচ্ছে। তা ছাড়া মার্কেট মালিক, ব্যবসায়ী, ফুটপাত দখলদার, পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শহরের প্রধান সড়কের ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে।

মেয়র জানান, ‘বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুর্নীতিমুক্ত পৌরসভা বিনির্মাণে সময়ের প্রয়োজনে যখন যা করা দরকার তা করতে আমি বরাবরই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close