দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি

  ১১ জুলাই, ২০২০

হারিয়ে যাচ্ছে ‘ডৌরি’

এক সময়ে গ্রামের ঘরে ঘরে থাকত মাটির তৈরি বিশালাকৃতির পাত্র। সেই পাত্রে সংরক্ষণ করা হতো বিভিন্ন শস্যের বীজ। বীজ সংরক্ষণের ওই সব পাত্র একেক জায়গায় একেক আকারের হতো এবং বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নাম থাকত। চুয়াডাঙ্গা এলাকায় একে ডৌরি বা কুটি বলা হতো। চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদার ডৌরি আজ বিলুপ্তির পথে। গ্রামের মাটির তৈরি কাঁচাঘরের জায়গায় উঠেছে টিনের ঘর, কোথাও কোথাও উঠেছে আধা পাকা বাড়ি, সেই সঙ্গে বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে ডৌরি।

এখন চাষিকে আর বীজ সংরক্ষণ করতে হয় না। কৃষি বিভাগ প্লাস্টিকের ছোট বড় ড্রাম সরবরাহ করলেও কোনো চাষি আজ বীজ সংরক্ষণ করেন না। কারণ বাজার থেকে বীজ কিনে আনতে হয় তাদের।

জানা গেছে, এক সময়ে গ্রামে মাটির ছয় থেকে আটটি চালা ঘর ছিল। বীজ সংরক্ষণের জন্য চাষির বউ ঝি’রাই কাদা দিয়ে মাটির ডৌরি (কুটি) তৈরি করতেন। এটেল মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতেন ধানের গুড়া। এরপর নিপুন হাতে বাড়ির উঠানেই তৈরি করতেন এই সব বীজ সংরক্ষণের পাত্র। কয়েক ধাপে চলত পাত্র তৈরির কাজ। প্রতি ধাপের পর পাত্রটি রোদে শুকাতে হতো। সময় লাগতো কয়েক মাস। সম্পূর্ণ ডৌরিটি তৈরি হয়ে গেলে ঘরের এক কোনে তুলে রাখতেন। ধান, গম, ছোলা, মসুরি, জব, পাট ও সরিষার বীজ ডৌরির মধ্যে রেখে কাদা দিয়ে মুখ আটকে দেওয়া হতো। যাতে বাইরে থেকে বাসাত যেতে পারত না। বীজ বপনের মৌসুমে ডৌরির মুখ খুলে সেসব বীজ বের করে আনা হতো। এ পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ করার ফলে কোনো বীজ নষ্ট হতো না।

এক সময়ে এক বাড়িতে দুই থেকে ৫টা ডৌরি থাকত। মাঝে মাঝে গৃহবধূরা লেপে পুছে ডৌরি সুন্দর করে রাখতেন। আজকের প্রজন্ম ডৌরি কি তা জানে না বা দেখেনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close