মাওলানা মাসউদুল কাদির

  ২৫ মার্চ, ২০২৪

দান-সদকায় পাঁচ মুক্তি

প্রতীকী ছবি

আজ ১৪তম রমজান। রমজানে দান করার গুরুত্ব অনেক। মুমিনের হৃদয় নরম হয়ে আসে এই সাওমে। অলসতার কারণে আমরা যথাসময়ে দান করতে পারি না। দান ও সদকা করার কারণে পাঁচ ধরনের মুক্তির কথা উঠে এসেছে হাদিসে। এ নিয়েই আজকের আলোচনা।

ভয়ঙ্কর মৃত্যু থেকে মুক্তি : মৃত্যু মানুষের জন্য অবধারিত। কোরআনে প্রত্যেক মানুষের মৃত্যু নির্ধারিত রয়েছে মর্মে ঘোষণা এসেছে। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দান-সদকাহ আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টি কমিয়ে দেয় এবং অপমানজনক মৃত্যু রোধ করে।’ (তিরমিজি)

গোনাহের কাফফারা : নামাজের মতো দান-সদকাও বিভিন্ন রকম ফেতনা থেকে বাঁচায়। সুরক্ষা দেয়।

অভাব থেকে মুক্তি : সাধারণ মানুষ আলেমদের কাছে অনেক বেশি দোয়া চান। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য বা রাষ্ট্রের মানুষের দোয়া চান। আদতে দান-সদকাই পারে মানুষকে অভাবমুক্ত করতে। মানুষ আল্লাহর দিকে ফিরে এলে তারা কষ্ট ভুলে যাবে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান (সম্পদে বরকত) দিন আর অন্যজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ (বোখারি)

হাশরের ময়দানে ছায়া লাভ : দানের মধ্যে কোনো রিয়া থাকতে পারবে না। অহংকার থাকলে দানের বরকত পাওয়া যায় না। তাৎপর্য নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্যই হাদিসে গোপনে দান করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না, সে দিন আল্লাহতায়ালা সাত প্রকার মানুষকে সে ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। (তাহলো) ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক। ২. যে যুবক আল্লাহর ইবাদতের ভেতর বেড়ে উঠেছে। ৩. যার অন্তরের সম্পর্ক সর্বদা মসজিদের সঙ্গে থাকে। ৪. আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে যে দু ব্যক্তি পরস্পর মহব্বত রাখে, উভয়ে একত্রিত হয় সেই মহব্বতের ওপর আর পৃথকও হয় সেই মহব্বতের ওপর। ৫. এমন ব্যক্তি যাকে সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (অবৈধ মিলনের জন্য) আহ্বান জানিয়েছে। তখন সে বলেছে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৬. যে ব্যক্তি গোপনে এমনভাবে দান-সদকা করে যে, তার ডান হাত যা দান করে, বাম হাত তা জানতে পারে না। ৭. যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাতে আল্লাহর ভয়ে তার চোখ হতে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।’ (বোখারি)

পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ : দান-সদকায় জান্নাতের দরজা খোলে যায়। মহান আল্লাহ খুশি হন। যে কারণে চিরস্থায়ী জান্নাতের সুযোগ লাভ হয় মুমিনের। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে কেউ আল্লাহর পথে জোড়া জোড়া ব্যয় (দান-সদকাহ) করবে তাকে জান্নাতের দরজাগুলো থেকে ডাকা হবে, হে আল্লাহর বান্দা! এটাই উত্তম। অতএব যে সালাত আদায়কারী, তাকে সলাতের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ, তাকে জেহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে রোজা পালনকারী, তাকে রাইয়ান দরজা থেকে ডাকা হবে।

বোখারিতে আছে, দান-সদকারী বান্দাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হবে। সদকার পৃথক দরজা থেকে ডেকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হবে। আল্লাহতায়ালা রোজার দিনে আমাদের আল্লাহমুখী হতে হবে। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।

লেখক : প্রিন্সিপাল, মাদরাসাতু ইকরা দারুল উলুম হবিগঞ্জ [email protected]

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
দান,সদকা,রমজান
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close