reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ জানুয়ারি, ২০২৪

ইচ্ছাকৃত বা ভুলে ছুটে যাওয়া কাজা নামাজের নিয়ত

ফাইল ছবি

কাজা নামাজ কাকে বলে? কেউ যথাসময়ে নামাজ পড়তে না পারলে, ঘুমিয়ে অথবা ভুলে গেলে, নামাজের নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে, পরে যখনই তার চেতন হবে অথবা মনে পড়বে তখনই ঐ (ফরজ) নামাজ কাজা পড়া জরুরি।

রসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি কোন নামাজ পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তাহলে তার কাফ্ফারা হল স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেওয়া। অন্য এক বর্ণনায় বলেন, এ ছাড়া তার আর কোন কাফ্ফারা (প্রায়শ্চিত্ত) নেই। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত ৬০৩)

তিনি আরো বলেন, ঘুম অবস্থায় কোন শৈথিল্য নেই। শৈথিল্য তো জাগ্রত অবস্থায় হয়। সুতরাং যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নামাজ পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তার উচিত, স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেয়া। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন, আর আমাকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে তুমি নামাজ কায়েম কর। (সুরা ত্বহা ১৪, মুসলিম, মিশকাত ৬০৪)

অতএব কাজা নামাজ পড়ার জন্য কোন সময়-অসময় নেই। দিবা-রাত্রের যে কোন সময়ে চেতন হলে বা মনে পড়লেই উঠে সর্বাগ্রে নামাজ পড়ে নেওয়া জরুরি। অন্যথা পরবর্তী সময়ের অপেক্ষা বৈধ নয়। বিনা ওজরে ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলে বা সুযোগ ও সময় থাকা সত্ত্বেও না পড়ে অন্য ওয়াক্ত এসে গেলে কবিরা গুনাহ হবে।

পড়লেও তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিনা ওজরে যথাসময়ে নামাজ না পড়ে অন্য সময়ে কাজা পড়ায় কোন লাভ নেই। বরং যে ব্যক্তি এমন করে ফেলেছে তার উচিত, বিশুদ্ধচিত্তে তওবা করা এবং তারপর যথাসময়ে নামাজ পড়ায় যত্নবান হওয়ার সাথে সাথে নফল নামাজ বেশী বেশী করে পড়া। (মুহাল্লা, মিশকাত ৬০৩)

কাজা নামাজের নিয়ত : কাজা নামাজের নিয়ত করবে, আমি ফজর নামাজের কাজা নামাজ পড়ছি আল্লাহু আকবার। আর কেউ যদি অনেক দিনের কাজা নামাজ একসঙ্গে আদায় করে তাহলে সে দিন উল্লেখ করে বলবে আমি অমুক দিনের ফজর নামাজ কাজা করছি। অমুক দিনের জোহর নামাজ আদায় করছি।

অমুক দিনের আসর নামাজ আদায় করছি। আর কেউ যদি উমরি কাজা তথা জীবনের শুরু থেকে যত নামাজ কাজা হয়েছে পড়তে চায় তাহলে, সে ফজর দিয়ে শুরু করতে পারে। মনে মনে নিয়ত করবে আমার জীবনের প্রথম ফজর নামাজ আদায় করছি। এভাবে যতদিন সে মনে করবে ফজর আদায় হয়নি ততদিন এভাবে নিয়ত করে পড়তে থাকবে।

কেউ অজ্ঞান থাকলে জ্ঞান ফিরার পূর্বের নামাজ কাজা পড়তে হবে না। কারণ, সে জ্ঞানহীন পাগলের পর্যায়ভুক্ত। আর পাগলের পাপ-পুণ্য কিছু নেই। (আবু দাউদ, সুনান, তিরমিজি, সুনান, মিশকাত ৩২৮৭, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ২৬/১২৮, ফিকহুস সুন্নাহ ১/২৪১, আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ২/১২৬) ইবনে উমার রা. অজ্ঞান অবস্থায় কোন নামাজ ত্যাগ করলে তা আর কাজা পড়তেন না। (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, ফিকহুস সুন্নাহ ১/২৪১)

অবশ্য নামাজ পড়তে পারত এমন সময়ের পর অজ্ঞান হলে জ্ঞান ফিরার পর সেই সময়ের নামাজ কাজা পড়া জরুরি। পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি যদি কোন কারণে কোন বস্তু ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় বেহুঁশ হয়, তাহলে তার জন্য কাজা পড়া জরুরি। (ঐ ২/১৮)

কাজা নামাজ পড়ার জন্য আজান ও ইকামত বিধেয়। কয়েক ওয়াক্তের নামাজ কাজা পড়তে হলে, প্রথমবার আজান ও তারপর প্রত্যেক নামাজের জন্য পূর্বে ইকামত বলা কর্তব্য।

এক সফরে আল্লাহর রসুল সা. সহ সাহাবাগণ ঘুমিয়ে পড়লে ফজরের নামাজ ছুটে যায়। তাদের চেতন হয় সূর্য ওঠার পর। অতঃপর একটু সরে গিয়ে তারা অজু করেন। বিলাল রা. আজান দেন। (মুসলিম ৬৮১, আহমাদ, মুসনাদ, আবু দাউদ, সুনান) অতঃপর সুন্নত কাযা পড়ে ইকামত দিয়ে ফজরের ফরজ কাযা পড়েন। (বুখারি ৩৪৪, মুসলিম, ৬৮০, নাইলুল আউতার, শাওকানি ২/২৭)

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কাজা নামাজ,ইকামত,আজান,রসুল সা.
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close