reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

সাফল্যের কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই, ১০ অভ্যাসে জীবন বদলে দিন

ছবি কোলাজ : প্রতিদিনের সংবাদ

পুরোনো সব হতাশা, ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য আপনার নতুন বছরকে সুন্দর করে তুলতে পারে। আর দেখতে দেখতে সেই নতুন বছরের ১৭টি দিন পার হয়ে গেছে।

নতুন বছর মানে নতুন সম্ভাবনা। তাই আজই শুরু করুন নতুন বছরের নতুন অভ্যাসগুলো। যেন সামনে আপনার দিনগুলো আলোকিত হয়ে উঠে। ফেলে আসা বছরে আপনি কী পাননি বা কী করতে পারেননি তার তালিকা নিশ্চয়ই ছোট হবে না। কিন্তু তা নিয়ে মন খারাপ করে থাকলে চলবে না। বরং সফলতার পথে এগিয়ে যেতে চাইলে আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। আনতে হবে পরিবর্তন।

তাই চলুন জেনে নেয়া যাক নতুন বছরে কোন কোন অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে-

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস ও সঠিক পুষ্টি গ্রহণের ওপর নির্ভর করে আমাদের সার্বিক সুস্থতা। তাই নতুন বছরের শুরুতেই আমাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে আপনি সারাবছর সুস্থ থাকবেন, আর বাকি কাজ আপনাআপনি ভালোভাবে করতে পারবেন। তাই নতুন বছরে সংকল্প করুন সারা বছরই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার।

সুস্থ থাকতে বছরের শুরুতেই আমাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

কেননা খাবার আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি ব্রেনে ক্যামিকেলি পরিবর্তন আনে। মেজার খিটমিটে হওয়া, মাথা ব্যথ্যা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা এসব ঘটে খাবারের জন্য। খাবার আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। তাই যদি কোনো কাজ সিরিয়াসলি করতে চাই তাহলে শরীরকে ভালো খাবার দিতে হবে।

নেশা ত্যাগ করুন : আপনি যদি কোনো নেশা দ্রব্যাদি গ্রহণ করেন, তাহলে নতুন বছরে সেটি বাদ দেয়ার চেষ্টা করুন। নেশা কোনো ভালো অভ্যাস নয়। এটি আপনার জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই প্রতীজ্ঞা করুন নেশা বর্জন করবেন।

শেখার অভ্যাস : শেখার কোনো বয়স শেষ নেই। তাই নতুন যেকোনো কিছু শিখে ফেলুন। এটি আপনার কাজে আসবে। তবে আপনি যাই শিখেন না কেন, খেয়াল রাখবের আপনার আগ্রহের জায়গা কোনটি। কেননা আগ্রহের কাজটি আপনি ভালো করে করতে পারবেন। কেননা আমরা অন্য যে কোনো কাজের চেয়ে আগ্রহের কাজে মনোযোগ বেশি দিতে পারি। মোট কথা নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আর এটি আপনাকে নানাভাবে সাহায্য করবে।

সক্রিয় থাকুন : নিয়মিত ব্যায়াম করুন। শারীরিক কার্যকলাপ স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটা, নাচ বা যোগ অনুশীলন হতে পারে আপনার পছন্দের ব্যায়াম। এটি আপনাকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার পাশাপাশি মানসিকভাবেও ভালো রাখবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করতে না পারলেও সপ্তাহে তিন বা চারদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যায়াম করুন।

ঘুমকে প্রাধান্য দিন : রাতে ঠিকমত ঘুম না হলে মানসিক চাপ বাড়ে। এত করে দিনের বেলায় কাজে মনোযোগ আসে না বরং একধরনের নির্লিপ্ততা কাজ করে। মানসিক সুস্থতা ও কর্মক্ষমতা অটুট রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং অন্ততপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলুন : ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তোলা মানসিক সুস্থতার জন্য জরুরি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার অভ্যাস অনুশীলন করুন। সমাধান সম্ভব এমন মানসিকতার সাথে চ্যালেঞ্জ মোকবিলা করুন। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি স্বাস্থ্যকর ও সুখী জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সঞ্চয়ের অভ্যাস : সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি সবার জন্যই জরুরি। কেননা সঞ্চয়ের বিষয়টি পুরোটাই অভ্যাস। আপনার সামর্থ্য কম থাকলে অল্প অল্প করে জমাতে শুরু করুন। এক সময় এটি অভ্যাসে পরিণত হবে। সেইসঙ্গে বাড়বে আপনার সম্পদের পরিমাণও। তাই যেকোনো প্রয়োজনে অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়ার বদলে নিজেই স্বাবলম্বী হোন।

জীবনের লক্ষ্য মনে রাখুন : আমাদের ভেতর মাত্র ১৪ ভাগ মানুষ জীবনের লক্ষ্য নিয়ে আগায়, আর তাদের সফলতার হার অন্যদের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আর মাত্র তিন ভাগ মানুষ জীবনের লক্ষ্য লিখিত আকারে রাখেন। সেটাকে আবার সাপ্তাহিক, মাসিক, দৈনিক—এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে লিখিত আকারে রাখেন। প্রতিদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষ্য পূরণ করে বড় লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। এদের সফলতার হার শতকরা ওই ১৪ জনের চেয়েও তিন গুণ বেশি।

পরিবারকে সময় দিন : আধুনিক জীবনের কর্মব্যস্ততার কারণে অনেকেই হয়ত পরিবারকে ঠিকমত সময় দিতে পারেন না। জীবন হয়ে উঠে একঘেঁয়ে ও যান্ত্রিক। এসব থেকে মুক্তি পেতে বছরের শুরুতেই পরিবার-পরিজন নিয়ে দূরে কোথাও বেড়িয়ে আসতে পারেন। সারা বছরের কর্মচাঞ্চল্য সঞ্চয় হবার পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে এতে।

এছাড়া আপনি যত ব্যস্তই থাকুন না কেন দিন শেষে পরিবারকে সময় দেয়ার চেষ্টা করুন। তাদের সাথে কিছুটা সময় কাটান। অন্তত যেকোন এক বেলার খাবার একসাথে গ্রহণের চেষ্টা করুন। কেননা পরিবার ঠিক থাকলে আপনি ভালো থাকবেন, আর আপনার সফলতার পেছনে কাজ করে পরিবার।

নিজেকে সময় দিন : কম্পিউটার ও স্মার্ট ফোনের ব্যবহার কমিয়ে আনুন। যান্ত্রিক ব্যস্ততা এড়িয়ে একান্ত কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন। নিজের মতো করে কিছু সময় উপভোগ করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনি চাইলে এ সময় উপভোগ করতে পারেন বই পড়ে কিংবা পার্কে হেঁটে।

অবশ্যই মনে রাখবেন, সফলতার কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। এটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। তাই আপনার করণীয় হলো প্রচেষ্টা ধরে রাখা।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অভ্যাস,ব্যায়াম,অধ্যয়ন,বেড়ানো,সঞ্চয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close