জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির বর্বর হামলায় প্রাণ ঝরেছে আরও ৩৩ ফিলিস্তিনির। আহত হয়েছেন অন্তত ৮০ জন। এলাকাটি দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দ্বারা অবরুদ্ধ ছিল। খবর আল জাজিরার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের চলমান হামলায় আরও ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৮০ জন। এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছেছে। আর আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৫৪৬ জনে।
আল-আওদা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহাম্মাদ সালহা বলেন, জাবালিয়ায় মারাত্মক হামলায় আহত প্রায় ৭০ জনের চিকিৎসা করা হচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে গাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। এরপর থেকে টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই সংঘাতের ফলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার মানুষ। ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় ফিলিস্তিনি ছিটমহলটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। আজ হামলার বছরপূর্তি হলেও এখনো যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো প্রতিদিন শোনা গেছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও মৃত্যুর খবর। জাতিসংঘের হিসাবমতে, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ চার কোটি ২০ লাখ টনেরও বেশি হবে। এসব ধ্বংসস্তূপ ২০০৮ থেকে গত বছর যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজা ভূখণ্ডে সঞ্চিত আবর্জনার ১৪ গুণ এবং ২০১৬-১৭ সালে ইরাকের মসুলে হওয়া যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের পাঁচ গুণের বেশি।
এক বছর ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১১ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
পিডিএস/এমএইউ