নাঈম মিয়া, কটিয়াদী

  ০৭ মে, ২০২০

করোনার প্রভাব

কটিয়াদীতে সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে হচ্ছে না বৈশাখী মেলা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে করোনাভাইরাসের কারণে এবার হচ্ছে না বৈশাখী মেলা। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ বুধবার থেকে সপ্তাহব্যাপী এ মেলার প্রচলন চলে আসছে সত্যজিতের পূর্ব পুরুষ জমিদার হরি কিশোর রায় চৌধুরীর সময়কাল থেকে। শ্রী শ্রী কাল ভৈরবী পূজা উপলক্ষে তিনি এ মেলার প্রচলন শুরু করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় আজ অবধি চলে আসছিল এ মেলা।

বাড়ির সামনের খোলা মাঠ, পুকুর ঘাট-সংলগ্ন খোলা জায়গায় মাটির পুতুল, হাড়ি-পাতিল, খেলনা, তৈজসপত্র, কসমেটিক, কাঠের জিনিস ইত্যাদি নানা রকম স্টলে মেলা উপলক্ষে মুখরিত হয় রায় বাড়ির এ প্রাঙ্গণ। নাগরদোলা ও চরকিতে চড়ে বিনোদনে মেতে ওঠে শিশু-কিশোররা। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ মেলা পরিদর্শন, কেনা কাটা ও বিনোদনের জন্য আসে। সমাগম হয় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কবি-সাহিত্যিকদের। সাহিত্য সংগঠনগুলো আসর বসায় গল্প কবিতা আর আড্ডার। কিন্তু করোনার কারণে এ বছর হচ্ছে না রায় বাড়ির এ বৈশাখী মেলা।

এ বাড়িতে ১৮৬০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায়। ১৮৮৭ সালে জন্ম নেন সত্যজিতের পিতা ছড়াকার সুকুমার রায়। দেশ বিভাগের আগে উপেন্দ্র কিশোর রায় সপরিবারে কলকাতা চলে যান। বর্তমানে বাড়িটি সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্বাবধায়নে রয়েছে।

সম্প্রতি পর্যটন বিভাগের উদ্যোগে একটি বাংলো নির্মাণ, পুকুর ঘাট ও রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এগুলো কিছুটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও সারা বছর থাকে অযত্ন অবহেলায়। আরও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে রায় বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য পর্যটন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী।

কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যান মুশতাকুর রহমান বলেন, করোনার কারণে মানুষের জীবন যেখানে শঙ্কিত, মানুষ যখন ঘরবন্দি—সেখানে তো আর মেলা করা সম্ভব না। তবে এ মহামারির প্রাদুর্ভাব কেটে গেলে আবারও হয়তো মেলাসহ সামাজিক উৎসবগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বৈশাখী মেলা,কটিয়াদী,সত্যজিৎ রায়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close