শিশু শিক্ষার্থীদের মাথায় স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুটের কার্টন
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির বিস্কুটের কার্টন। ১০ কেজি ওজনের বিস্কুটের এসব কার্টন মাথায় নিয়ে এক কিলোমিটার পথ হেঁটে মাদরাসায় নিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার সাধু হোসাইনিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসার কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী মাথায় স্কুলের কার্টন নিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি নজরে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাধু কুটিরপাড়া এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির বিস্কুটের কার্টন মাদরাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সাধু হোসাইনিয়া ইবতেদায়ি মাদারসার প্রধান শিক্ষক ফখরুল হোসেন তা করেননি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ১০ কেজি ওজনের একটি করে বিস্কুটের কার্টন প্রায় এক কিলোমিটার পথ শিশু শিক্ষার্থীদের মাথায় দিয়ে পরিবহন করাচ্ছেন তিনি। আর খালি কার্টন বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন তিনি। এতে করে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শিশু শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতি মাসে তাদেরকে বিস্কুটের কার্টন পাকা রাস্তা থেকে এভাবে নিয়ে যেতে হয় মাদরাসায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক জানান, মাদরাসার প্রধান শিক্ষক বিস্কুট বিতরণ কর্মসূচির পরিবহন খরচ আত্মসাৎ করতে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের মাথায় তুলে দিচ্ছেন। ১০ কেজি ওজনের কার্টন শিশু শিক্ষার্থীরা মাথায় নেয়ায় অনেক চাপ পড়ে। তারা শিশুদের দিয়ে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট পরিবহন বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্কুল ফিডিং কর্মসূচির বিস্কুটের কার্টন শিশুদের দিয়ে মাদরাসায় নিয়ে আসার বিষয়টি স্বীকার করে সাধু হোসাইনিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ফকরুল হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত নয়, মাঝে মাঝে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে বিস্কুটের কার্টন শিশুদের দিয়ে মাদরাসায় আনা হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকিরুল হাসান বলেন, স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুটের কার্টন পরিবহন ব্যয় সরকারিভাবে দেয়া হয়। এরপরও শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিস্কুটের কার্টন পরিবহন করা ঠিক নয়, এটা এক প্রকার শিশু শ্রম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম নাজিয়া সুলতানা বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিডিএসও/রি.মা