-মো. ইমরান হোসেন

  ০২ মার্চ, ২০১৮

ইতিহাসের প্রচলিত ধারা বদলে দিতে পারে

কায়কোবাদ মিলন। লেখক ও সাংবাদিক। ভ্রমণ করেছেন একাধিক দেশ। দেখেছেন অন্য দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থা। সে তাড়না থেকেই বই লেখা। বাংলায় অনুবাদ করে জানাতে চান বিদেশের চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা কাহিনি। সে ধারারই বই ‘ঢাকা-কলিকাতার যত যুদ্ধ’। প্রকাশিত হয়েছে জ্ঞান বিতরণী প্রকাশনী থেকে। অন্যটি ‘মোসাদ ২’ বের হয়েছে আবিষ্কার প্রকাশনীর ব্যানারে।

‘ঢাকা কলিকাতার যত যুদ্ধ’ দুই বাংলাতেই প্রথম বাংলা ভাষায় ছাপা হয়েছে। ভারত, পাকিস্তানের দেশভাগের ফলে লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়ে পড়েছিল। ভয়, আতঙ্ক, ধর্মান্তরকরণ, ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হয়ে এসব মানুষ মাতৃভ‚মি, বসতভিটা, জমি-জিরোত ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে স্থায়ী হয়েছিল। হিন্দুর হাতে হাজার হাজার মুসলমান এবং মুসলমানের হাতে অনুরূপ হিন্দুর জীবনাবসান ঘটলেও এ বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ কোনো গবেষণা হয়নি। এ বইয়ে সব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের প্রেসিডেন্ট রাজেন্দ্র প্রসাদ, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়সহ ভারতীয় নেতৃবৃন্দ যেমন এই ঘটনার নায়ক-খলনায়ক ছিলেন, তেমনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান, প্রেসিডেন্ট আইউব খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো, মোনায়েম খান প্রমুখও নায়ক এবং খলনায়কের ভ‚মিকায় ছিলেন।

১৯৪৭-এর দেশবিভাগ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত উল্লেখিত দুই দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদরা দুই দেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে যত চিঠি চালাচালি করেছেন তা উঠে এসেছে বইটিতে। এসব চিঠিতে হিন্দু মুসলমানদের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের অনুভ‚তিগুলো তুলে ধরা হয়েছে। নেহেরুর চিঠির পালটা জবাব কী ভাষায় দিলেন লিয়াকত আলী খান বা আইউব খান তা এক ঐতিহাসিক দলিল। এরকম প্রামাণ্য গ্রন্থ ইতোপূর্বে আর বাংলা ভাষায় ছাপা হয়নি। ভারত পাকিস্তান সরকারের এই গোপনীয় চিঠিগুলো সম্প্রতি ভারত থেকেই অবমুক্ত করা হয়েছে। পাকিস্তান করছে কি না, জানা নেই। ঘটনাপঞ্জীতে প্রধান দুটি স্থান হিসেবে ঢাকা ও কলিকাতার প্রসঙ্গই মুখ্য। কেননা, ঢাকা তথা পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে বলেছে পাকিস্তান সরকার। অনুরূপ কলিকাতার পক্ষে পাল্টা চিঠি, টেলিগ্রাম করেছে ভারত সরকার। এ যেন একেবারেই ঢাকা ও কলিকাতার মধ্যকার যুদ্ধ। এ জন্যেই বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘ঢাকা-কলিকাতার যত যুদ্ধ’। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানবিরোধী দাঙ্গার যাবতীয় ঘটনাবলি যেমন এই বইয়ে রয়েছে, তেমনি পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলায় কবে কোথায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে কত লোক মারা গেছে সবই উঠে এসেছে। ভারত পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কয়েক লাখ লোকের নিহত হওয়ার চেয়ে বড় ঘটনা এই উপমহাদেশে আর ঘটেনি। একই সঙ্গে আসাম ও ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। ওই সময়কার দাঙ্গায় দুই দেশের যেসব হিন্দু মুসলমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সর্বস্ব হারিয়েছেন তাদের এবং তাদের উত্তরসূরি বরাবরে এই বই হাজির করতে পেরে লেখক কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট। এই বইয়ের মাধ্যমে পাঠকের ইতিহাসের প্রচলিত ধারণাও বদলে যেতে পারে।

‘মোসাদ ২’ কায়কোবাদ মিলনের মোসাদ বইয়ের দ্বিতীয় খÐ। মোসাদ বিশ্বের ভয়ঙ্কর গোয়েন্দা সংস্থা। ইসরায়েলি এই সংস্থাটির দুঃসাহসিক অভিযান নিয়েই বইটি। মোসাদ-২ মূলত বিদেশি বইয়ের বাংলা অনুবাদ। ইহুদিদের ইতিহাস, আরব ভ‚খÐে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন এবং কার্যকলাপ অন্তহীন জল্পনার বিষয়। বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবেও এটি বিবেচিত। সেই মোসাদের নেপথ্যের কাহিনি নিয়ে বই লিখেছেন মিশায়েল বারজোহার এবং নিসিম মিশাল।

মোসাদের ষাট বছরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, নিন্দিত, বিতর্কিত ও সঙ্কটাপন্ন মিশনগুলো নিয়ে তৈরি বইটি। এর প্রতিটি ঘটনাই সত্য ও বাস্তবিক। ইন্টেলিজেন্স যুদ্ধ সম্পর্কে যাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ রয়েছে তাদের কাছে এ বই এক অমূল্য সম্পদ। লেখক জোহার চারটি ইসরায়েল-আরব যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মিশাল টিভি ব্যক্তিত্ব এবং ইসরাইলের সরকার নিয়ন্ত্রিত টিভির মহাপরিচালক। ২০১০ সালে মোসাদ বইটি যখন প্রথম প্রকাশিত হয় তখন এক নাগাড়ে ৭০ সপ্তাহ বইটি ছিল বিশ্বে বেস্ট সেলার। এরই মাঝে বেশ কয়েকটি ভাষায় মুদ্রিত হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist