কাজী মাহবুবুর রহমান, আশুলিয়া
বিচার নিশ্চিতের দাবি মাহাবুবা পারভীনের
ঢাকা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবা পারভীন। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় অংশগ্রহনের জন্য সাভারের নিজ বাসা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাভার বাজার বাসষ্ট্যান্ডে এসে গাড়ি না পেয়ে দ্রুত পৌছানোর জন্য একটি ট্যাক্সিক্যাব ভাড়া করে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জনসভায় যোগ দেন। সেখানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে জনসভার ঠিক সামনে ডান পাশে চাকার কাছে দাঁড়িয়ে আমি নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনছিলেন। শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপা বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্য শেষে যখন শেখ হাসিনা ‘জয় বাংলা’ বলে শ্লোগান দিবেন ঠিক সেই মুহূর্তেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে প্রাণঘাতী গ্রেনেড। চলে গুলিবর্ষণও।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশে চালানো হামলায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৬ জন নিহত হয়। আহত হয় কয়েকশ মানুষ। আহতদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন শরীরে অসংখ্য গ্রেনেডের স্প্রিন্টার নিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তারাও। অনেকেই আবার চিরদিনের মতো পঙ্গ হয়ে গেছেন।
এদেরই একজন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া এক নারী সাভারের মাহবুবা পারভীন। শরীরে ১৭৯৭ টি স্প্রিন্টার নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। তার বা হাত এখনও অচল, চোখে কম দেখেন, ডান কানে কম শোনেন, তার শরীরের চামড়ার ভিতরে ঘা হয়ে গেছে।
ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবা পারভীন বলেন, গ্রেনেড হামলার এক যুগ পার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা ছাড়া সাভারের স্থানীয় এমপি কিংবা চেয়ারম্যান অথবা দলীয় নেতা-কর্মী কারও কাছ থেকেও ১০ টাকা সাহায্য পাননি তিনি। কেউ কোনদিন তার খোজও নেয়না। অসুস্থ্য হওয়ার আগে ঢাকায় দলীয় কর্মসূচীতে প্রায়ই অংশ নিতেন তিনি । এখন ইচ্ছা থাকলেও দলের নেতাকর্মীদের কোন সহযোগীতা না পাওয়ায় কোন কর্মসূচিতে যেতে পারছেনা না তিনি। তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলায় মাটিতে লুটিয়ে পরার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমি নিজেকে আবিস্কার করি। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে পিজি হাসপাতাল এবং এর ৫/৬ দিন পর বাংলাদেশ মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে শেখ হাসিনা আপার সহযোগীতায় কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ২৫ দিন চিকিৎসা দেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও অর্থাভাবে তা সম্ভব হচ্ছেনা।
"