মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

কুমিল্লার শাসনগাছা ফ্লাইওভার

চালকদের দৌরাত্ম্যে প্রবেশ মুখে যানজট, ভোগান্তিতে নগরবাসী

কুমিল্লা মহানগরীর অন্যতম প্রবেশ পথ শাসনগাছা পুরাতন ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাঙ্ক রোড। এই পথে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩৮টি রেল চলাচল করে এই পথে। ফলে শাসনগাছায় নিত্য যানজট লেগেই থাকতো। ২০১৪ সালে শাসনগাছা এলাকায় নির্মাণ শুরু হয়ে ২০১৮ সালে শেষ হয় ফ্লাইওভারের কাজ। নগরবাসী আশায় বুক বেধেঁছিল যানজট নিরসনের। কিন্তু শাসনগাছা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের বাস চালকদের দৌরাত্বে সেই দুর্ভোগ থেকে কোনভাবেই যেন মুক্তি মিলছে না। প্রতিদিন বিভিন্ন গন্তব্য থেকে আসা বাসগুলো ফ্লাইওভারের পশ্চিম অংশে কৃষি অফিসের সামনে এসে চালকরা অজ্ঞাত কারণে যাত্রীদের টার্মিনালে না নিয়ে নামিয়ে দিচ্ছেন। পরবর্তীতে ফ্লাইওভারের মাথায় বাস চালকরা বাস ঘুরানোর প্রতিযোগীতা শুরু করে। বন্ধ হয়ে যায় দু’দিকে যান চলাচল। সৃষ্ট হয় যানজট। বাড়তে থাকে দুর্ভোগ। এচিত্র প্রতিদিনের। তবুও খেয়াল নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর শাসনগাছা এলাকায় যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার নির্মাণ হলেও জনদুর্ভোগ থেকে কোনভাবেই যেন মুক্তি মিলছে না সাধারন মানুষের। প্রতিদিনই শাসনগাছা আস্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ জেলার দাউদকান্দি, মুরাদনগর, হোমনা রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসগুলো ফ্লাইওভারের পশ্চিম অংশে এসে অজ্ঞাতকারণে টার্মিনালে প্রবেশ না করে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। পরে ফ্লাইওভারের মাথায় বাস ঘুরানোর প্রতিযোগিতা শুরু করে। এতে করে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে ফ্লাইওভারের পশ্চিম মুখে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে বাস এভাবে ঘুরানোর কারণে দু’পাশে থাকা বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিণা) ও হর্টিকালচার সেন্টারের সীমানা প্রাচীর হুমকীর মুখে পড়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙে গেছে এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর। স্থানীয় একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কুমিল্লা-সিলেট রুটের কুমিল্লা ট্রান্সপোর্ট, কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুটের সুগন্ধা পরিবহন, কুমিল্লা-দাউদকান্দি রুটের পাপিয়া ট্রান্সপোর্ট, কুমিল্লা-মুরাদনগর রুটের ফারজানা পরিবহনের বাসগুলোছাড়াও ফ্লাইওভারের মুখে অবৈধভাবে গড়ে উঠা সিএনজি ও মাইক্রোবাস ষ্ট্যান্ডের গাড়িগুলো সারাদিনই এখানে উল্টোপথে ঘুরানোর কারণে সৃষ্ট হচ্ছে এই যানজট ও দুর্ভোগ। এছাড়াও ফ্লাইওভারের নীচের দুই পাশ দিয়ে শাসনগাছা আনঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তেব্যে আসা-যাওয়া বাসগুলোর জন্য দু’টি সড়ক থাকলেও শাসনগাছা থেকে বাসগুলো স্বাভাবিকভাবে বের হলেও ঢাকা, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়াসহ জেলার বিভিন্ন গন্তব্য থেকে আসা বাসগুলো অজ্ঞাতকারণে প্রবেশ মুখে দাড় করিয়ে রাখে দীর্ঘ সময়। ফলে সেখানেও নিয়মিত যানজটের সৃষ্ট হচ্ছে। এতে করে শাসনগাছা এলাকা দিয়ে নগরীতে প্রবেশের জন্য নির্মিত ফ্লাইওভারের সুফল পাচ্ছে না সাধারন মানুষ। একই অবস্থা ফ্লাইওভারের পূর্ব অংশের রেইসকোর্স এলাকাতেও। সেখানেও ফ্লাইওভারের মুখে বেপরোয়াভাবে সিএনজি অটোরিক্সা, ইজিবাইক বা কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল বেপরোয়াভাবে পার্কিং করে রাখায় যানজট লেগেই আছে।

নগরীর জিলা স্কুল, মডার্ন হাই স্কুল, ওয়াই ডব্লিও সি এ ’র একাধিক শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন সকালে স্কুলে যেতে শাসনগাছা ফ্লাইওভারটি নীচের যানজট থেকে সময় বাঁচাতে অনেক ভূমিকা রাখত, যদি ফ্লাইওভারের পশ্চিম অংশের মাথায় যানবাহন ঘুরানোর কারণে যানজট সৃষ্ট না হতো। বেপরোয়া বাস চালানোর কারণে ফ্লাইওভারের পাশে বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিনা) এর সীমানা প্রাচীরটিও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে নির্মাণের পর ভেফু যাচ্ছে।

বিনা’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোসাম্মৎ সিফাতে রাব্বানা খানম বলেন, বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ লিখিতভাবে থানায় জানিয়েছি। তবুও সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close