শাকিল আহমেদ, ঠাকুরগাঁও

  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ঠাকুরগাঁওয়ে ৬ মাস ধরে সড়ক দখল করে দোকান

ঠাকুরগাঁও শহরের ব্যস্ততম বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এতে চলাচলে অসুবিধাসহ ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। গত ছয় মাস ধরেই চলছে এই দোকানগুলো। গতকাল রোববার দুপুরে ওই সড়ক ঘুরে এই দৃশ্য দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরগাঁওয়ে সফরের সময় নিরাপত্তার কথা ভেবে গত ২৯ মার্চ মাঠের চারপাশ থেকে দোকানিদের সরিয়ে দিয়ে মাঠের চারপাশ কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। সেসব দোকানিরা এখন শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল দোকান নিয়ে বসেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

স্থানীদের অভিযোগ, বৃক্ষ রোপন ও মাঠ সংরক্ষণের নামে বেড়া দেওয়া হলেও ভ্রাম্যমান দোকানিদের ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া ছয়মাস ধরে রাস্তার দখল করে দোকান বসলেও তা উচ্ছেদে কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। তবে প্রশাসন বলছেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। দখলদার দোকানগুলো অন্যত্র সড়ানোর বিষয়টিও আলোচনা চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলো থেকে প্রাথমিক শিক্ষক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে ১৫ থেকে ২০টি দোকান বসেছে। এসবের মধ্যে ১০টি চটপটি ও ফুচকার দোকান; অন্যগুলো কাপড়ের। মূল দোকানটি সড়কের ওপর রেখেই রাস্তার ওপর ক্রেতাদের জন্য আসন পেতেছেন তারা। দোকান ঘেঁষে চলছে বাস, ট্রাক, পিকআপসহ নানা যানবাহন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন খদ্দেররা।

শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁও বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বিকেল হলেই সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড়মাঠে নারী-পুরুষ ও শিশুদের সমাগম বেড়ে যায়। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমান। শিশুরা নিজেদের মধ্যে ফুটবল-ক্রিকেট খেলে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যান।

ঘোষপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ হক বলেন, কিছুদিন আগে বড়মাঠে সরিয়ে ছিটিয়ে চটপটি, ফুচকাসহ নানা খাবারের দোকান বসত। বাড়ি ফেরার আগে লোকজন ওইসব চটপটি ও ফুচকা খেয়ে বাড়ি ফিরতেন। সম্প্রতি বড়মাঠের চারপাশ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে সেসব দোকানীদের মাঠের ভেতর থেকে সরিয়ে দেয় পৌরকর্তৃপক্ষ। এখন দোকানীরা বড়মাঠের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে সড়ক দখল করে দোকান নিয়ে বসেছেন। শহরের সরকারপাড়ার আরমান হোসেন বলেন, বাচ্চারা সবসময় ব্যস্ত রাস্তার উপর বসে চটপটি-ফুচকা খায়। কখন যে কোন দুর্ঘটনা ঘটে কে জানে?

বসিরপাড়া মহল্লার জুয়েল ইসলাম বলেন, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কটি একটি দুর্ঘটনা প্রবণ সড়ক। সম্প্রতি শহরে যেসব বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই ঘটেছে এই সড়কে। এই সড়কের ওপর এভাবে ব্রেঞ্চ পেতে খাবারের দোকান বসানো ঠিক নয়। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। একই এলাকার সুলতানা পারভিন বলেন, কিছুদিন আগে তিনিসহ তাঁর মেয়ে সড়কের পাশে ফুচকা খেতে গিয়ে একটি ইজিবাইকের ধাক্কায় আহত হয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে দোকান নিয়ে বসা মো. হাসান বলেন, আমরা পেটের দায়ে এখানে দোকান করছি। মাঠের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় উপায়ন্তর না পেয়ে ব্যস্ত সড়ক দখল করে দোকান বসিয়েছি। আমাদের দোকান নিয়ে বসার একটা জায়গা করে দিলে আমরা সেখানে চলে যাব।

জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন বলেন, মাঠরক্ষার জন্য ও মাঠের চারদিকে গাছ লাগানোর জন্য আমরা কাটাতারের বেড়া দিয়েছি। মাঠের পাশের দোকানদাররা এখন সড়কে দোকান নিয়ে বসেছে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। দোকানীদের অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনা চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close