ক্রীড়া ডেস্ক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮

হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন রামাচন্দ্র

ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট কোহলি এখন অন্য চূড়ায় বসে আছেন। তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে চাকরি হারাতে হয়েছিল কোচ অনিল কুম্বলেকে। তার প্রভাব-প্রতিপত্তি শুধুই ড্রেসিংরুমে, এমনটা ভাবলে ভুল হবে। বোর্ডের ভেতরেও ভারতের সর্বাধিনায়ক কতটা প্রভাব খাটান, এবার সেই তথ্যই ফাঁস করলেন দেশটির বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও ক্রিকেট লেখক রামাচন্দ্র গুহ।

২০১৭ সালের জুনে দায়িত্ব ছাড়ার আগ পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রশাসনিক কমিটির সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন রামাচন্দ্র। ওইসময় কোহলির ‘একনায়কতন্ত্রের’ শিকার হতে হয়েছিল তাকে। এ কারণেই নাকি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি! বোর্ডের প্রায় সব ব্যাপারে এখনো কোহলির প্রভাব এতটাই বেশি যে, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন হর্তাকর্তারাও! সম্প্রতি ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে কোহলির বিরুদ্ধে এভাবেই বোমা ফাটিয়েছেন রামাচন্দ্র।

‘অ্যাবোভ অল এলস’ শিরোনামের কলামের শুরুটা হয়েছে কোহলির দুটি স্কয়ার ড্রাইভের গল্প দিয়ে। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে শট দেখে রামাচন্দ্র টুইট করেছিলেন, তার সর্বকালের সেরা ভারতীয় একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন কোহলি। গত দুই বছর ধরে এমনই সব শটে রামাচন্দ্রকে মোহমুগ্ধ করে রেখেছেন কোহলি। তার ব্যাটিং-শৈলীর সৌন্দর্য এ সময়ে আরো বেড়েছে। এখন আর শুধু একাদশে জায়গা পাচ্ছেন না, রামাচন্দ্রের চোখে ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান কোহলি। টেন্ডুলকার, গাভাস্কার, দ্রাবিড় কিংবা শেবাগও পিছিয়ে পড়েছেন সব ফরম্যাটে কোহলির সাবলীলতার কাছে।

এমন মুগ্ধতাও রামাচন্দ্রের মুখ বন্ধ করতে পারেনি। কোহলির দাপটের সামনে কোচিং স্টাফ, নির্বাচক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাÑসবাই নাকি বামন (তার ভাষায় ‘পিগমি’) হয়ে থাকে! রামাচন্দ্রের চোখে মোদিরও এত ক্ষমতা নেই, ‘ভারতীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যতটা না সম্মান করেন, বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা কোহলিকে তার চেয়েও বেশি আরাধনা করেন। এমনকি যে বিষয়ে কথা বলার কোনো এখতিয়ার নেই, সে বিষয়েও নাক গলায় কোহলি!’

চার মাস প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা রামাচন্দ্রের দাবি, ভারতের ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) ও জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির কর্মপরিকল্পনাও ঠিক করে দিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার কাপ্তান। অনিল কুম্বলেকে পদত্যাগে বাধ্য করা এবং রবি শাস্ত্রীকে কোচ বানিয়ে আনার জন্যও বোর্ডের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন মিস্টার ‘চিকু’।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতের নাকানি-চুবানি খাওয়ার পেছনেও দায় কোহলির বলেই মনে করেন রামাচন্দ্র। এই কলামের আগে ‘প্লেয়িং গালি ক্রিকেট অ্যাট হোম উইথ দ্য শ্রীলঙ্কানস’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে রামাচন্দ্র তুলে ধরেন, ‘টেস্ট সিরিজ শুরুর অনেক আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রাখা উচিত ছিল টিম ইন্ডিয়ার। কিন্তু বোর্ড কর্তারা যেন কোহলির নিকট জিম্মি! দলনেতার তৈরি করে দেওয়া সূচি অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে কোনো অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগই পায়নি ভারত। যার ফলস্বরূপ প্রথম দুই টেস্টেই সিরিজ হেরে বসেছে তারা।’

রামাচন্দ্রের মতে, একগুঁয়ে কোহলির এ ধরনের প্রভাব বিস্তার ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য অশনিসংকেতই বটে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে বোর্ড কর্মকর্তাদের সাহসী হতে হবে। নিজেদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে। সঙ্গে কোহলির ‘ক্ষমতার লাগাম’ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist