আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ অক্টোবর, ২০১৯

পুরো ভারতেই এনআরসি হবে বললেন অমিত শাহ

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই আসামে নাগরিক তালিকা (এনআরসি) হয়েছে। আসামের মতো করেই ভবিষ্যতে ভারতের বিভিন্ন স্থানে এনআরসি চালু করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার মতে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তবে কবে নাগাদ এই প্রক্রিয়া শুরু হবে তা নিশ্চিত করেননি তিনি।

অমিত শাহ বলেন, আসামে এনআরসি চালু করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা সারা দেশে এনআরসি চালু করার কাজে সাহায্য করবে। সারা দেশের জন্য লিক-প্রুফ এনআরসি আনা হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। আসামে এনআরসি চালু করতে যেসব সমস্যা দেখা গেছে, সারা দেশে এনআরসি চালু করতে সেসব সমস্যা দূর করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এনআরসি কি একটি রাজনৈতিক অস্ত্র নাকি এতে কোনো সুবিধা হবে?

অমিত শাহ বলেন, এনআরসি তারা করেননি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তা করা হয়েছে। এনআরসি কি সারা দেশেই চালু করা হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেন, হ্যাঁ, উচিত সময়েই তা করা হবে। এর আগে অমিত শাহ বলেছিলেন, শুধু আসামেই নয় অবৈধ অভিবাসীদের পুরো ভারত থেকেই বিতাড়িত করা হবে।

গত ৩১ আগস্ট আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকা থেকে ১৯ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়েছে। এরপরেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রত্যেক অবৈধ অভিবাসীকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।

আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে রাজ্য বিজেপির একাংশ হতাশ। কেননা বাঙালি হিন্দুদের একটা বড় অংশের নাম সেই তালিকা থেকে বাদ গেছে। আসামের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশই বাঙালি হিন্দু। তারাই আবার বিজেপির বড় সমর্থক।

দলের বিধায়ক শিলাদিত্য দেব অভিযোগ করে বলেছিলেন, হিন্দুদের দূরে রাখতে এবং মুসলিমদের সহায়তা করার ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল এনআরসি। একাধারে তিনি বিজেপির সভাপতি এবং ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর মন্ত্রীসভা গঠনের সময়ই কথা উঠেছিল যে এবার কাঁধ থেকে দায়িত্ব নামাবেন অমিত শাহ।

অবশেষে বিজেপির এই সভাপতি গত সোমবার নিজের মুখেই ঘোষণা করলেন যে, নতুন সভাপতি পেতে চলেছে দল। চলতি বছরের শেষের দিকে অর্থাৎ আগামী ডিসেম্বরে সাংগঠনিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দলের নেতৃত্বের জন্য নতুন নেতার পথ তৈরি করবেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই দলের মধ্য থেকে নতুন একজন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়া টুডের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সভাপতির আসনে না থাকলেও তিনি পর্দার আড়াল থেকে দলকে পরিচালনার সুপার পাওয়ার হিসেবে কাজ করবেন এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। তিনি আরো জানান, ২০১৪ সালে তিনি বিজেপি প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ও ঠিক এমনই কথা উঠেছিল এবং একবার তার বদলে অন্য কেউ এসে সংগঠনের হাল ধরলেই সব জল্পনা শেষ হবে।

বিজেপি যে নিজস্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই পরিচালিত হবে সে কথা উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, বিজেপি কংগ্রেসের মতো নয় এবং কেউ একে পর্দার আড়াল থেকে চালাতে পারবে না। বিজেপি সাধারণত এক ব্যক্তি এক পদ রীতি অনুসরণ করে। তাই আশা করা হয়েছিল যে অমিত শাহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর নতুন একজন নেতার জন্য দলের পথ তৈরি করে দেবেন। এ বিষয়ে অমিত শাহ বলেন, সাংগঠনিক নির্বাচন সামনে। নতুন সভাপতি ডিসেম্বরের মধ্যেই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং দলের বিষয়গুলো বুঝে নেবেন। ২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় ভোট হবে। ফল প্রকাশ হবে ২৪ অক্টোবর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close