আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২০ আগস্ট, ২০১৮

নতুন জঙ্গিবিমান আনছে ইরান ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে

চলতি সপ্তাহেই ইরান নতুন একটি জঙ্গিবিমান উড়াবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি। মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির প্রভাব কমাতে ও তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির লাগাম টানতে আরোপ করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তেহরান ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার আধুনিকায়ন অব্যাহত রাখবে বলেও শনিবার জানিয়েছেন তিনি, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিতে একইদিন ইরানের নৌবাহিনী তাদের যুদ্ধজাহাজে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে নির্মিত অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংযুক্ত করার ঘোষণাও দিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানার শর্তে ছয় বিশ্বশক্তি, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে ২০১৫ সালে ইরানের চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিলে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। অবশ্য প্রথম থেকেই জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের এ চুক্তির বিরুদ্ধে ছিলেন ট্রাম্প। ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইরাকে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন জানানোর ভেতর দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের প্রভাব বলয়ের বিস্তার এবং তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের লাগাম টানার প্রসঙ্গটি অনুপস্থিত থাকায় জেসিপিওএকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করে আসছিলেন তিনি।

ট্রাম্পের উত্থাপিত এ বিষয়গুলোর সমাধানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। ‘ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির আধুনিকায়নেই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এক্ষেত্রে আমরা ভালো অবস্থানে আছি, তবুও এগুলোর আধুনিকায়ন দরকার। জাতীয় প্রতিরক্ষা শিল্প দিবসে আমরা একটি নতুন বিমান উপহার দেব। জনগণ এটিকে উড়তে ও যে সরঞ্জাম ব্যবহার করে এটি বানানো হয়েছে তা দেখতে পাবে,’ হাতামি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে ইরানি বার্তা সংস্থা ফারস।

২২ আগস্টকে জাতীয় প্রতিরক্ষা শিল্প দিবস হিসেবে উদ্যাপন করে ইরান। ২০১৩ সালেও ইরান ‘কাহের ৩১৩’ নামে স্থানীয়ভাবে নির্মিত নতুন একটি জঙ্গিবিমান উন্মোচন করেছিল। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য তখনো ওই জঙ্গিবিমানের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।

দেশটির বিমান বাহিনীর কাছে আক্রমণ চালানোর সক্ষমতাসম্পন্ন অল্প কয়েক ডজন এয়ারক্রাফট আছে যেগুলোর বেশির ভাগই হয় রাশিয়ান নতুবা ১৯৭৯-র ইসলামী বিপ্লবের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কেনা পুরনো মডেলের বিমান।

সে তুলনায় ইরানি নৌ বাহিনী বেশ শক্তিশালী। শনিবার দেশটির নৌ কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেইন খানজাদি উপকূল ও সমুদ্রে স্বল্প পাল্লার কামান্দ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন। ‘একটি যুদ্ধজাহাজে এটি সংযুক্ত করা হয়েছে, দ্বিতীয় আরেকটি যুদ্ধজাহাজেও দ্রুতই এটি যুক্ত করা হবে,’ খানজাদি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির আধা স্বায়ত্তশাসিত বার্তা সংস্থা তাসনিম। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও বাধায় অস্ত্র আমদানি করতে না পারলেও ইরান স্থানীয়ভাবে বিশাল অস্ত্র শিল্প গড়ে তুলেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী উপসাগরে ‘শত্রুর হুমকি মোকাবিলায়’ মহড়া করার কথাও জানিয়েছিল।

হরমুজ প্রণালির আশপাশে বিস্তৃত এলাকায় তেহরানের নৌ তৎপরতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। তেল রফতানি ও সমুদ্র যোগাযোগের জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ জলপথটি ‘প্রয়োজনে বন্ধ করে দেওয়া হবে’ বলেও হুমকি দিয়ে রেখেছে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close