মো. মাইনুদ্দীন রুবেল, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

  ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২

মহাজোটের প্রার্থিতা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে মহাজোটের প্রার্থীতা নিয়ে জাপার দুই প্রার্থী শ্বশুর-জামাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে। দুজনই নিজেদের মহাজোটের প্রার্থী বলে দাবি করছেন। মহাজোটের প্রার্থীতা লিখে পোস্টারও সাটিয়েছেন।

জাপা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বর্তমান এমপি কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউর হক মৃধা। তিনি এ আসনে পরপর দুইবার জাপার এমপি। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাপার মনোনয়ন পান এমপি জিয়াউলের মেয়ের জামাই রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া।

জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বাক্ষরিত দলীয় প্রার্থী হিসেবে জামাই রেজাউল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শ্বশুর জিয়াউল নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে গত ৯ ডিসেম্বর জাপার বতর্মান মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা স্বাক্ষরিত আরেকটি মনোনয়নপত্র জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়ে লাঙ্গল প্রতীকের জন্য আবেদন করেন বর্তমান এমপি জিয়াউল। জাপা মহাসচিব জিয়াউলকে মহাজোটের প্রার্থী উল্লেখ করে গত ১০ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেন। কিন্তু জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেজাউলকে লাঙল ও জিয়াউলকে সিংহ প্রতীক বরাদ্দ দেন। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল বা নৌকা প্রতীক পেতে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেও জিয়াউলের কোনো লাভ হয়নি।

এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্চাসেবক লীগের সহসভাপতি মঈনউদ্দিন মঈন (কলার ছড়ি) স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,্ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বিভিন্নস্থানে শ্বশুর জিয়াউল হক নিজেকে মহাজোটের প্রার্থী দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সিংহ প্রতীক সম্বলিত পোস্টার সাঁটিয়েছেন। অপরদিকে জামাতা রেজাউলও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার আশুগঞ্জ উপজেলার কিছু কিছু জায়গায় টানানো হয়েছে। জামাই-শ্বশুরের মধ্যে দিনদিন দ্বন্দ্ব বাড়েই চলেছে। শ্বশুর জিয়াউল হক জামাতাকে নিজের লাশ দেখতেও বারণ করেছেন।

এদিকে জিয়াউল হক মৃধা নিজেকে মহাজোটের প্রার্থী দাবি করে পোস্টার লাগানোর প্রতিবাদে গত রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মলেন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু নাসের আহমেদ বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিতসভা করে স্বতন্ত্রপ্রার্থী মঈনউদ্দিনকে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।

আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মইনউদ্দিন মঈন বলেন, দুই উপজেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীকে পাচ্ছে না। এদুই উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। তৃণমূল আমাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়েছে। তাদের আবেগ, ভালোবাসা ও এলাকার উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই নির্বাচনে নেমেছি।

জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও বিএনপির আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জিয়াউল হক মৃধা বলেন, এআসেন আমিই মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী। এলাকার লোকজন এখানে বহিরাগত কোনো প্রার্থীকে মেনে নেবেন না। এলাকার লোকজন আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। মেয়ের জামাই আমার সঙ্গে বেঈমানি করে রাজনৈতিকভাবে আসনি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

জেলা জাপার যুগ্ম-সদস্য সচির নাসির আহমেদ খান বলেন, এ আসনে রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াই মহাজোটের প্রার্থী। আমরা মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। জিয়াউল হক মৃধার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close