নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

মতবিনিময় সভায় ইশরাকের ক্ষোভ

কেউ ঝুঁকি নেবে কেউ ঘুমাবে, তা চলবে না

সিটি নির্বাচনে বিএনপির সব নেতা সমানভাবে কাজ করেননি বলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দলের পরাজিত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। গতকাল রোববার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর মতো শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় এ অভিযোগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

ইশরাক বলেন, ‘কেউ ঝুঁকি নেবে, কেউ ঘুমিয়ে থাকবে, সেটা হতে পারে না। এভাবে আমাদের সাফল্য আসতে পারে না।’

১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি নির্বাচন-পরবর্তী নিজেদের কাজের মূল্যায়নে দক্ষিণে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে নয়াপল্টনে আনন্দ ভবন কমিউনিটি সেন্টারে এ মতবিনিময় সভা হয়।

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীসহ স্থানীয় নেতারা প্রথমে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে ১০ মিনিট ধরে প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। দক্ষিণে বিএনপি প্রার্থী করেছিল ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে রাজনীতিতে নবিশ ইশরাককে। উত্তরে প্রার্থী ছিলেন তাবিথ আউয়াল। দুই সিটিতে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের চেয়ে প্রায় দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারলেও বিএনপি অভিযোগ করেছে, কারচুপির মাধ্যমে তাদের হারানো হয়েছে। তবে মতবিনিময় সভায় দলের দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেন ইশরাক।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন সকালবেলা ভোট দিয়ে আমি নিজেও কেন্দ্র থেকে কেন্দ্র ঘুরে বেড়িয়েছি। আমি আকাশ-পাতাল তফাত লক্ষ করেছি। কিছু কিছু এলাকায় আমি দেখেছি, সেখানকার কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজের জান-জীবন ঝুঁকি রেখে চেষ্টা করেছে নির্বাচনের বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য। আবার কিছু কিছু জায়গায় আমি গিয়ে দেখেছি, সেখানে কাউন্সিলর প্রার্থীও নেই, আমাদের স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী যারা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের সংগঠিতই করা হয়নি।’

নির্বাচনের দিন কার কী ভূমিকা ছিল, নাম উল্লেখ না করে স্থানীয় নেতাদের তা জানাতে আহ্বান জানান ইশরাক।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমাদের মধ্যে যে দুর্বলতাগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে, যাতে সামনের দিনগুলোতে আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে পারি। নির্বাচনের দিন কার কী ভূমিকা ছিল, সেটা আপনারা কারো নাম উল্লেখ না করে বলুন।’

ইশরাক বলেন, ‘আমরা যদি সুসংগঠিত হয়ে সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন বেগবান না করতে পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর মুক্তিও শিগগিরই সম্ভব হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখানে শপথগ্রহণ করেছেন ওয়ার্ড-থানাসহ সব পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করে, আরো শক্তিশালী করে আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করব। আমরা আশা করি, ঢাকা মহানগরী সারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে আজকে প্রস্তুত।’

দক্ষিণে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের কিছু একটা করা উচিত ছিল। এমন একটা সংবাদ পেলাম না যে, ওখানে কিছু একটা হয়ে গেছে। হয় নাই। সুতরাং আমাদের সংগঠনটাকে আমাদের জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সুন্দর ও সুসংগঠিত করতে হবে।’

এই নির্বাচনে বিএনপি যে গুটিকয়েক কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, তার মধ্যে ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাসের ভাইও রয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুস সালাম, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, আফরোজা আব্বাস, শিরিন সুলতানা, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সুরুজ মিয়া, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, নবী উল্লাহ নবী, রফিক শিকদার এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close