সংসদ প্রতিবেদক

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

সংসদে মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি

বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ

‘বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার মানা যায় না’

বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিদ্যুৎ খাতে কোনো অগ্রগতি ছিল না। তাদের সময়ে বিদ্যুতের আওতায় ছিল মাত্র ৪৩ শতাংশ মানুষ। আর এখন এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ শতাংশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ খাতে এই উন্নতি হয়েছে। যা বিএনপি-জামায়াত সরকারের উন্নয়নের দ্বিগুণের বেশি। আশা করছি, শিগগিরই দেশের শতভাগ বাড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে যাবে।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম এই মন্তব্য করেন। বিকাল সাড়ে ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। বিদ্যুৎতের এই সাফল্যের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষি খাত, শিল্প ও সেবা খাতের ভঙ্গুর অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণে কুইক রেন্টাল কোম্পানির মাধ্যমে কাক্সিক্ষত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এর মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ সম্ভব হয়েছে। এখন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত সরকার বিদ্যুৎ খাত ভঙ্গুর অবস্থায় রেখে বিদায় নেয়। অথচ বিদ্যুৎ সেক্টরে আজ বিপ্লব ঘটেছে। বিদ্যুতের জন্য এখন আর মানুষের প্রাণ দিতে হয় না।

সরকার দলীয় এই এমপি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে কৃষিতে অব্যবস্থাপনার কারণে আন্দোলন হয়েছে। অনেক কৃষককে সার ও কীটনাশকের জন্য জীবন দিতে হয়েছে। এই সরকারের আমলে কৃষিতেও বিপ্লব ঘটেছে। আজ সার ও কীটনাশকের কারণে কৃষকদের আর আন্দোলন করতে হয় না। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এসব ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল বিএনপি।

বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির ওই অর্থমন্ত্রী বলতেন, বাজেটের আকার বেশি হলে বিদেশ থেকে অনুদান মিলবে না। তাদের সময়ে ৬১ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট দিতে পারেনি। অথচ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সরকার ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করেছে। আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার দাঁড়াবে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি কোটি। অর্থাৎ আমরা পিছিয়ে থাকব না। সামনের দিকে এগিয়ে যাব। তিনি বলেন, বিএনপির সময়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৯ ভাগ। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৪ শতাংশে। অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা আর অর্থমন্ত্রীর প্রচেষ্টার কারণে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। শিগগিরই মধ্যম আয়ের দেশ হবে। সরকার পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী রোল মডেল।

জিডিপিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সরকারের চিত্র তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সময়ে জিডিপির আকার ছিল মাত্র ৭২ হাজার বিলিয়ন ডলার। আর এখন জিডিপির আকার ২ লাখ ৫০ হাজার বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ বিএনপির সময়ের চেয়ে ২০ লাখ কোটি টাকা বেশি। আগে মাথাপিছু আয় ছিল ১৪৩ ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০৫ ডলারে। এই পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। বিএনপির সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার বিলিয়র ডলার বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার বিলিয়ন ডলারে।

বেগম খালেদা জিয়ার মামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, ওনার এই মামলা আওয়ামী লীগ সরকার দেয়নি, দিয়েছিল সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণার দিনে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা চালানো হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা হয়, বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করা এটা কোনোভাবেই মানা যায় না। কারণ তিনি স্বাধীন দেশ দিয়েছেন, দিয়েছেন পতাকা ও জাতীয় সংগীত।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে এমপি তাজুল ইসলাম বলেন, এদেশে প্রথমে রোহিঙ্গাদের পুশ করা হয় ১৯৭৮ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে। কিন্তু তৎকালীন সরকার এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। অথচ এবার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে শেখ হাসিনার পদক্ষেপে বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে থাকছে। এ কারণে বিশ্ব নেতারা তাকে মাদার অব হিউমিনিটি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

হলি আর্টিজানের ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় সরকার যেভাবে জঙ্গি নির্মূলে সাফল্য অর্জন করেছে তা বিশ্বে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অনেক অর্জন রয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যার মাধ্যমে জাতির জনকের সংগঠনকে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল মন্তব্য করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, দলের নেতাকর্মীদের ওপরে অনেক নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েও দলকে নিচিহ্ন করা যায়নি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশে ফিরে নিরলস শ্রম দিয়ে দলকে আবার চাঙা করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist