বদরুল আলম মজুমদার

  ০৫ জানুয়ারি, ২০১৯

বিশ্বনেতাদের ব্যাপক অভিনন্দন

শক্তিশালী সরকার গঠন করবেন শেখ হাসিনা

আন্তর্জাতিক পরাশক্তির সব পক্ষই আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছে। এ বিজয়ের জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্বেরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিশ্বনেতারা। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বাচন নিয়ে দেশের বিরোধীপক্ষগুলোর অভিযোগকে পাত্তা না দিয়ে আওয়ামী লীগের আগামী সরকারকে স্থায়িত্বপূর্ণ এবং মানের দিক থেকে শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ রেখেছেন।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী নেতাদের ব্যাপক সমর্থনের পর দলটির নির্বাচিত নেতৃত্ব শক্তিশালী সরকার গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার দেশের ইতিহাসে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নির্বাচনের পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা এবং এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় চীন সরকারের অভিবাদনও আওয়ামী লীগ নেতাদের মনোবল আরো শক্ত করেছে। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানও অভিনন্দন জানিয়েছে বিজয়ী নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ জয়কে ভারত ও চীনের পাশাপাশি পশ্চিমা দুনিয়াসহ আরব দেশগুলোর তড়িৎ শুভেচ্ছা বার্তাও দেশের স্থিতিশীলতার জন্য মাইলফলক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট

ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম প্রশাসনসহ যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘের অভিবাদন নতুন সরকারকে অনেক বেশি শক্তিশালী করবে। আওয়ামী নেতাদের কথায়ও এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে বিশাল বিজয় যেমন চমক আবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভা গঠনেও একই চমক দেখাতে পারেন। জনগণের প্রতি সরকারের দায়িত্ববোধ আরো বাড়বে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিনন্দন বার্তায় মোদি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার করছে, তা আরো জোরদার হবে। ভবিষ্যতে যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, তার নেতৃত্বে সংস্কার ও উন্নয়ন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।’ পরদিন সোমবার এক সাংবাদিকের প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা জেতাতে আমরা খুশি।

নির্বাচনের পরদিন চীনের রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছুটে আসেন চীনের রাষ্ট্রদূত শি জিন পিং। এত তড়িঘড়ি চীনের এ অভিবাদন সরকারবিরোধী মহলকে হতবাক করলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তা কাক্সিক্ষত ছিল বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছিলেন, চীনা রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো গত মঙ্গলবার এক বার্তায় বলেছেন, ‘সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশংসার দাবি রাখে। কেন না, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বয়কট করলেও এই নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়। একাদশ নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণও প্রশংসনীয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অসাধারণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের কদরকে আরো এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারি এবং বিরোধী দলের সঙ্গে কাজ করবে।’

যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এক বার্তায় বলেছেন, বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত ভোটের বেসরকারি ফলাফল জানতে পেরেছি। এ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সবগুলো বিরোধী দলকে সাধুবাদ জানাই। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রবাসী রয়েছে। স্থিতিশীল, সমৃদ্ধিশালী এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ করতে যুক্তরাজ্যের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

এর বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মাজা কোচিজানসিস এক বার্তায় বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখবে এবং মানবাধিকার ও মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা বহাল থাকবে।’

এ ছাড়া ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভোট অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে পৃথক বার্তা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো এক বার্তায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ এ প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া বিশ্বের আরো যে কজন রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তারা হলেন—ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোট তাসারিং, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি। শুভেচ্ছা বার্তায় রুহানি বলেন, ‘সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ এ সাফল্যকে সম্ভবপর করেছে এবং এতে আপনার নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থার প্রকাশ ঘটেছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অভিনন্দন,বিশ্বনেতা,শেখ হাসিনা,সরকার গঠন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close