পটুয়াখালী প্রতিনিধি

  ০৯ আগস্ট, ২০১৭

ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত

সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত খ্যাত কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত অব্যাহত ভাঙনে প্রতিনিয়ত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমের অস্বাভাবিক জোয়ারে এ ভাঙন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ফার্ম অ্যান্ড ফার্মস ও কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যোনের শত শত গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ভাঙনের কবলে সমুদ্র তীরের বহু ক্ষুদে দোকানি তাদের দোকানপাট কয়েক দফা স্থানান্তর করেছেন ইতোমধ্যে। মহাসড়কের পাশে ছাড়া এখন আর সরানোর জায়গা নেই। ফলে ক্ষুদে দোকানিরা এখন চরম বিপাকে পড়েছেন।

জানা যায়, গত কয়েক বছরের সমুদ্রের অব্যাহত ভাঙনে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সমুদ্রের ঢেউয়ের ঝাপটায় ও অব্যাহত বালু ক্ষয়ে দীর্ঘ প্রায় ৩৩ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। গত ১০ বছরের ব্যবধানে লতাচাপলী মৌজার কয়েক হাজার একর জমি সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে সৈকতের সবুজ বেষ্টনি, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানসহ মসজিদ-মন্দির। ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে বনবিভাগের কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমি। ১৯৬০ সালে সৈকতের কোল ঘেঁষে প্রায় ২শ একর জমিতে ছিল প্রকৃতি প্রেমী ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান। ফয়েজ মিয়ার এ নারিকেল বাগানটির প্রতি ছিলো ভ্রমণ পিপাসুদের এক অন্যরকম আকর্ষণ। কুয়াকাটা ফার্মস অ্যান্ড ফার্মস নামে বাগানটির নামকরণ থাকলেও সারি সারি নারিকেল গাছ থাকায় নারিকেল বাগান হিসেবেই সকলের কাছে পরিচিত ছিল বাগানটি। গাড়ি পার্কিং, পিকনিক স্পট, পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্র ছিল এ বাগানটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে বাগানটি আজ শুধুই স্মৃতি।

সরেজমিনে জানা যায়, গত ২০ বছর যাবৎ অব্যাহত বালুক্ষয় হচ্ছে সমুদ্র সৈকতের। বালুক্ষয় রোধের চেষ্টা করেনি কোন সরকার। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জোয়ারের পানি অস্বভাবিক বৃদ্ধি পায়। ফলে প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে বালুক্ষয়ে ছোট হয়ে যাচ্ছে সাগরকন্যা কুয়াকাটা। এতে সৈকতের বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য গাছের মূল। এছাড়াও বনাঞ্চলের পাশে এখনও অসংখ্য গাছ উপচে পড়ে আছে। ফলে জোয়ারের সময় কুয়াকাটা আগত দর্শনার্থীদের সমুদ্রস্নানে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব জানান, কুয়াকাটা বীচ প্রটেকশনের কাজ দ্রুত শুরু না করলে অবশিষ্ট সৈকত চরম দুরবস্থায় পড়বে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের জানান, কুয়াকাটা বীচ রক্ষা প্রকল্পের কাজের পরিকল্পনা চলছে। তবে কবে নাগাদ এ কাজ শুরু হবে তা জানাতে পারেননি তিনি। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড. মাছুমুর রহমান জানান, সৈকতের বালুক্ষয়রোধে সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে যা অচিরেই কাজ শুরু করা হবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সমুদ্র সৈকত,কুয়াকাটা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist