শিল্পকলায় তানভীর মোকাম্মেলের ‘সীমান্তরেখা’
হুলিয়া, চিত্রা নদীর পাড়ে, লালসালু, লালন, কর্ণফুলীর কান্না ও রাবেয়া বাংলা চলচ্চিত্রের অসাধারণ এই নামগুলোর সঙ্গে যে মানুষটির নাম জড়িয়ে আছে তিনি তানভীর মোকাম্মেল। শুধু ফিকশনাল চলচ্চিত্রই নয়, ডকুফিকশন নির্মাণেও এই মানুষটি অগ্রগামী। সম্প্রতি ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ইতিহাস নিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন ‘সীমান্তরেখা’ নামের আরো একটি প্রামাণ্যচিত্র। যার প্রদর্শনী হবে আগামীকাল বুধবার শিল্পকলায়। দর্শনার্থীরা বিকেল ৩টা, সাড়ে ৫টা ও রাত ৮টায় প্রামাণ্যচিত্রটি উপভোগ করতে পারবেন।
৪৭-এর দেশভাগের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল নির্মাণ করেছেন নতুন প্রামাণ্যচিত্র ‘সীমান্তরেখা’। গেল অক্টোবরের ২৫ তারিখে পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রিমিয়ার শো হয়। এখানে শুধু আমন্ত্রিত অতিথিরাই উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে এবার সর্বসাধারণের জন্য ‘সীমান্তরেখা’ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ও পরেরদিন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দর্শনীর বিনিময়ে প্রদর্শীত হবে ‘সীমান্তরেখা’।
‘সীমান্তরেখার কাহিনি গড়ে উঠেছে ভারত-বাংলাদেশ বিভাজনের সময় দুই দেশের মানুষের চরম যন্ত্রণার কথা নিয়ে। দুই দেশের মানুষ এখন কেমন আছে? দেশভাগের পর এতগুলো বছর কেটে গেছে, আজও দুই দেশের মানুষের দুচোখ বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা। কারওবা গলায় শোনা যায় চাপা আর্তনাদ। দেশ পারাপারের সময় কিশোরী ফেলানীর শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় বিএসএফ। এখনো তার মা-বাবা বিচারের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন। প্রাণের ভয়ে জীবনের শেষ সম্বলটুকু সঙ্গী করে একখণ্ড কাপড় অঙ্গে জড়িয়ে পূর্ব বাংলা থেকে লাখো মানুষ এপারে চলে আসে। আজ তারা মাথার ওপর এক টুকরো ছাদ হয়তো পেয়েছে। কিন্তু ৭০ বছরের আগের সংগ্রাম আজও তাদের শেষ হয়নি।
প্রসঙ্গত, কিনো-আই ফিল্মস প্রযোজিত তানভীর মোকাম্মেলের ‘সীমান্তরেখা’ প্রামাণ্যচিত্রটি গণ-অর্থায়নে নির্মিত। গণ-অর্থায়নে চলচ্চিত্র নির্মাণের এই প্রচেষ্টাকে অনেকে বাংলাদেশে একটি উদাহরণ সৃষ্টিকারী ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন।
পিডিএসও/তাজ