আব্দুস সালাম বাবু, বগুড়া

  ২১ এপ্রিল, ২০২৪

করতোয়ার ১৭ কিমি পুর্নখনন শুরু, নদীপাড়ে উচ্ছ্বাস

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় বগুড়ার করতোয়া নদীর পুর্নখননসহ সৌন্দর্যবর্ধন কাজ চলছে। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বগুড়ায় দখল-দূষণে মৃতপ্রায় করতোয়া নদীর সৌন্দর্যবর্ধন কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে বগুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। এতে করে করতোয়া নদীর পানি প্রবাহ যেমন স্বচ্ছ হবে তেমনি নদীর হারানো যৌবন ফিরবে।

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা থেকে সদর উপজেলার নওদাপাড়া পর্যন্ত ১৭ কিমি খনন কাজ গত মার্চ মাসের ১৩ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ২২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

জানা যায়, পৃথকভাবে এই কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হয়েছে। শাজাহানপুর এলাকায় বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, সদর উপজেলার মাটিডালী এলাকায় সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এই কাজের উদ্বোধন করেন।

আরো জানা যায়, ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় করতোয়া নদী পুর্নখনন ও ডান তীরে স্লোপ প্রটেকশন কাজ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে কাজটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রচেষ্টায় আলোর মুখ দেখল বগুড়ার করতোয়া নদী খনন প্রকল্প। এতে শহর অংশে ১৭ কিমি খনন, এসপি ব্রীজ থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত ৭৩০ মিটার নদীতীর রক্ষা কাজের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা পাবে, সৌন্দর্যবর্ধনসহ ওয়াকওয়ে নির্মাণে দৃষ্টিনন্দন হবে নদীর ডান তীর।


  • প্রকল্পের ব্যয় ৩৬ কোটি টাকা
  • ইতিমধ্যেই ২২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় পাউবো
  • নদীর সীমানায় অবৈধ যারাই থাকবে তাদের উচ্ছেদ করা হবে বলে জেলা প্রশাসকের হুঁশিয়ারি

পাউবো বগুড়ার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ন কবির জানান, তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়, জেলা কারাগার, মহিলা কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা পাবে। এছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন হবে নদীর ডান তীর। ইতিমধ্যেই ২২ শতাংশ খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে, দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানান তিনি।

এদিকে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক বলেন, করতোয়া নদীর খনন সম্পন্ন হলে প্রাকৃতিক উৎস থেকে এ অঞ্চলের মানুষ মৎস আহরণ করতে পারবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী সঠিকভাবে খনন হলে অন্তত বর্ষায় পানি প্রবাহ থাকবে বলে মনে করেন বাপার এই নেতা।

উদ্বোধনকালে বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, মৃতপ্রায় করতোয়া আবারও প্রাণ ফিরে পাবে। করতোয়া নদী খনন এবং রাস্তা তৈরি হলে শহরের যানজট অনেকটা কমে যাবে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, করতোয়া নদীর সীমানার মধ্যে অবৈধ যারাই থাকবে তাদের উচ্ছেদ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, মাত্র ১৭ কিমি অংশ খনন করে পুরো নদীর নাব্য ফেরানো সম্ভব নয়। যেহেতু মূল প্রকল্পটি অনুমোদনে বিলম্ব হচ্ছে সে কারণে ছোট আকারে কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

নাজমুল হক আরো বলেন, এ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মূল প্রকল্পটির অনুমোদন হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন। তখন ১৭ কিমি অংশ বাদ দিয়ে কাজ করা হবে। নদী খননে অগ্নি নির্বাপনের পানি সরবরাহের জলাধারসহ কৃষি উৎপাদন ও মৎসচাষে সুবিধা পাবে এ অঞ্চলের মানুষ।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বগুড়া
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close