আশিক সালাম

  ১৬ নভেম্বর, ২০১৮

সোহরাব পাশার কবিতা

শিল্প ও সংবেদনা

আমাদের সাহিত্যালোচনায় দশকওয়ারি হিসাব কষার একটা রেওয়াজ চালু আছে। মূলত সাহিত্য ক্ষেত্রে কারো উত্থানকালকে চিহ্নিত করে আলোচনার সুবিধার্থে এই প্রবণতা। কিন্তু দশকের অঙ্কপাতে লেখক-কবিকে শনাক্ত করার প্রয়োজনীযতা খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না। তবু প্রথাসিদ্ধ এই মানদ-কে যদি মান্য করা যায়, তাহলে কবি সোহরাব পাশার অবস্থানবিন্দুটি কোথায়? একজন কবি তো যথারীতি অল্পবিস্তর পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েই বৃহত্তর পাঠক-দরবারে উপস্থিত হয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে সোহরাব পাশাকে সত্তর ও আশির দশকের সন্ধিলগ্নের কবি বলে চিহ্নিত করা যায়। কেননা বাংলা কাব্যাঙ্গনে সত্তরের শেষার্ধে তার আগমন সূচিত হলেও পাঠক-পরিচিতি লাভ আশির দশকে। এ-প্রসঙ্গে কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থের ব্লার্ব থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া যায়Ñ ‘সত্তর দশকের মধ্যভাগ থেকে কবিতা লিখছেন সোহরাব পাশা। পাঠকপরিচিতি পেয়েছেন আশির দশকে। ফলে, যখন দশকওয়ারি কোনো সংকলন বের হয়, তখন তাকে দুই পক্ষই রাখেন নো-ম্যানস ল্যান্ডে। এতেও প্রকৃত কবির ক্ষতিবৃদ্ধির কিছু আছে বলে মনে হয় না।’ (বিকেলে জলপাই রোদে) মোদ্দাকথা, শিল্পবিচারে দশকের হিসাব কোনো মুখ্য বিষয় নয়। নিজস্ব রচনাকর্মই প্রকৃত কবিকে চেনার ও চেনানোর প্রকৃষ্ট উপায়।

বাংলা কবিতার আবহমান ঐতিহ্যের জলস্রোতে অবগাহন করেই সোহরাব পাশার যাত্রা শুরু। প্রধানত বড় কাগজগুলোর সাহিত্যপাতাকে আশ্রয় করেই তার আত্মপ্রকাশ ও বেড়ে ওঠা। দেশের সব কটা বড় কাগজ, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিকসহ প্রায় সব সাময়িক পত্রিকায় তার কবিতা নিয়মিত পত্রস্থ হয়ে আসছে। এভাবেই তার পাঠকবৃত্তের পরিধি ক্রমেই বিস্তৃতি লাভ করেছে।

সোহরাব পাশার কাব্যচর্চার মেয়াদকাল বিগত সাড়ে তিন দশকে ব্যাপ্ত। এ যাবৎ প্রকাশিত তার কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৪টিÑ পাথর রাত্রি (১৯৮৮), আনন্দ বাড়ি নেই (১৯৯৩), বিকেলে জলপাই রোদে (২০০২), শরবিদ্ধ স্বপ্নবেলা (২০০৪), ভালোবাসা অগ্নির হাতে (২০০৯), কেউ বলে না কিছুই (২০১১), নির্বাচিত কবিতা (২০১১), ভুল মানুষের ভিড়ে (২০১৩), মুক্তিযুদ্ধের কবিতা (২০১৩), আমার সমস্ত গন্তব্যে তোমার বাড়ি (২০১৪), তোমার জন্যে সকল আঁধার (২০১৫), প্রেমের কবিতা (২০১৬), মেঘ নিয়ে বাড়ি ফেরা (২০১৭), চোখ ফেরালেই মাধবী নেই (২০১৮)।

পাশা তার ‘ভালোবাসা অগ্নির হাতে’ কাব্যগ্রন্থের ‘প্রসঙ্গ-কথা’য় জানাচ্ছেন, ‘কবিতা মানুষকে মানুষ লেখাতেও পারে না শেখাতেও পারে না। এ ক্ষেত্রে প্রকৃতিই তার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। একজন কবি প্রকৃতির কাছ থেকে কীভাবে-কেমন করে পাঠ নেন তা বোধ করি কবি নিজেও জানেন না।’ কবিতা বিষয়ে পাশার এই আত্মভাষ্য আমাদের তিরিশের স্বনামখ্যাত কবি-সম্পাদক বুদ্ধদেব বসুরই প্রতিধ্বনি। কবিতা প্রসঙ্গে বুদ্ধদেবীয় উক্তিÑ

‘কবিতা লেখা যায় না, লেখা হয়।’ পাশার উদ্ধৃত ভাষ্য থেকে সহজেই অনুমান করা যায় কলাকৈবল্যবাদী না হয়েও শিল্পনিষ্ঠায় কবির পক্ষপাত কতদূর। কবি তার মেধা ও মনন, আবেগ ও অনুভূতি, অভিজ্ঞতা ও কল্পনার রাসায়নিক মিশ্রণে নির্মাণ করেন সৌন্দর্যময় এক আনন্দলোক। কবির কাজ কবিতা নির্মাণ; তার অন্বিষ্ট এমন এক নন্দনবিশ্বের আভাসন, যাতে পাঠকচিত্ত আবিষ্কার করে কবিচৈতন্যের গভীর উড়াল, স্পর্শ করে অপার্থিব রহস্যের দোলা। সোহরাব পাশা সেই সৌন্দর্যময় নন্দনবিশ্বের অনুসন্ধানে ব্রতী।

আবহমান বাংলা কবিতার প্রধান প্রবাহ রোমান্টিকতা। এ-ধারারই অন্যতম কবি সোহরাব পাশা। জীবনানন্দীয় প্রকৃতিঘনিষ্ঠ নিমগ্নতা তার অন্যতম ধ্যান। রোমান্টিক চেতনার স্পর্শে পাশার কবিসত্তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয়। তার সমস্ত কবিতাজুড়েই এই কবিচারিত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছে। তার কাব্যভাষার চিত্রলতা ও গীতিময়তা এক মোহনায় মিলনাভিসারী। ফলে তার কবিতা পাঠে লাভ করা যায় এক ধরনের মুগ্ধতা ও লালিত্যের আস্বাদ। সংবেদনশীল এ-কবি একাধারে স্বপ্নাতুর এবং স্পর্শকাতর। পাশার ক্রিয়াশীল প্রধান ইন্দ্রিয় ‘চোখ’ এবং ‘আঙুল’। কবির কবিতায় ইন্দ্রিয় দুটির পাশাপাশি অবস্থান যেনবা নিয়তিনির্ধারিতÑ ‘এই মৃত্তিকার ঘ্রাণে অপূর্ব কুসুম ফোটানোর/স্বপ্ন দেখেছিলে মুগ্ধ চোখে আর দ্রোহের আঙুলে।’ (কুসুম ফুটানোর যুদ্ধ/আনন্দ বাড়ি নেই) দীর্ঘ রাত্রির প্রস্তরিত অন্ধকার হাতড়েও ‘চোখ’ তার প্রার্থনা করে মেঘের পালকছেঁড়া ‘স্বপ্নদ্যুতি বৃষ্টির আনন্দ’ আর ‘আঙুল’ তার তীব্র উন্মুখ অপূর্ব ‘কুসুম ফোটানো’র ব্যাকুল প্রত্যাশায়।

বিষয়বস্তু আহরণে সোহরাব পাশা বৈচিত্র্যসন্ধানী হলেও দূরবিহারী নন; পরিপার্শ্ব থেকেই গ্রহণ করেন যাবতীয় মালমসলা। প্রেম প্রকৃতি নারী স্বদেশ সমাজ রাজনীতি পরিবেশ প্রতিবেশ সভ্যতা সময় ও সমকাল আদ্যোপান্ত তার কবিতার উপজীব্য। সৃষ্টিশীল সত্তার শেকড় দেশ-কাল-মৃত্তিকায় প্রোথিত। উন্মুল-উদ্বাস্তু কোনো সৃষ্টিরই আয়ুষ্কাল দীর্ঘ নয়। কবি-সমালোচক ওবায়েদ আকাশ লেখেনÑ ‘কবি যেমন নিজের কাছে নিজে দায়বদ্ধ, তেমনি কবি দায়বদ্ধ তার দেশের কাছে। আর তাই কবির ভাবনার কিংবা কবিতার প্রধান বিষয় তার মাতৃভূমি ও মৃত্তিকাসংলগ্ন সংস্কৃতি।’ (‘কবিতার বিষয়’, লতাপাতার শৃঙ্খলা, প্র. প্র. ২০১২, ধ্রুবপদ, ঢাকা-১১০০, পৃ. ৩৩)

দেশাত্মবোধ কবিপ্রাণের মৌল প্রেরণা। মা-মাতৃভূমি কবির কাছে তাই স্বর্গের চেয়েও গরীয়সী। নিজ বাসভূমিই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও প্রিয়তম বাড়ি। এই বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাওয়ার কথা কিছুতেই ভাবতে পারেন না কবিÑ ‘এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বাড়িটি আমার/...এই বাড়ি ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না।’/ (প্রিয় বাড়ি/বিকেলে জলপাই রোদে)

একাধারে প্রবল হৃদয়সংবেদ, রহস্যময়তা, মননশীলতা ও গভীর দার্শনিক বোধ সোহরাব পাশার কবিতার উপাচার। কবিতায় তিনি একদিকে ব্যক্তিগত প্রেমাবেগ, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ, আশা ও হতাশা, স্মৃতিকাতরতা, সুখ-দুঃখ ও বেদনাকে উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি ক্রান্তিকালীন নিষ্ফলা সময়, পতনোন্মুখ সভ্যতা, মানবতার লাঞ্ছনা ও রাজনীতির চালচিত্রকে শিল্পিত বাগ্বিন্যাসে প্রতিভাসিত করেন। কবির প্রেমিকসত্তা নারী ও প্রকৃতির প্রতি আকুলতায় উদ্বেল। কবির অনুভবÑ ‘ভালোবাসা ছাড়া এ চোখের/দ্বিতীয় আকাশ নেই।’ (ভালোবাসা ছাড়া/বিকেলে জলপাই রোদে) এবং শত বিপর্যয়েও মানুষ ভালোবাসার সন্ধানে ফেরেÑ ‘মানুষের বিষাদ-প্রার্থনা বিনম্র করুণ চিঠি/ছিঁড়ে যায় বাতাসের বিরুদ্ধ ডানায়/তবুও মানুষ ছোটে পথে ও প্রান্তরে/খুঁজে ফেরে ভালোবাসা/সব ফেলে ছুঁতে চায় প্রিয় দুটি চোখ/আর চোখের গভীর নদী।’ (প্রাচীরের রুগ্ন গল্প/ কেউ বলে না কিছুই)

কবির স্বাপ্নিক চোখ প্রকৃতির সৌন্দর্যে মগ্ন ও মোহিত। প্রকৃতির বিনাশে শঙ্কিত কবির ব্যাকুল আর্তিÑ ‘জীবনানন্দের জোছনার মাঠে ওড়ে/দীর্ঘশ্বাসের করুণ ধুলো।’/ (কৃষ্ণপক্ষ/বিকেলে জলপাই রোদে)

নারী ও প্রকৃতির প্রতি কবির যে সংবেদনশীলতা, ক্রমে তা দেশাত্মবোধ ও সমাজচেতনায় সম্প্রসারণ লাভ করেছে। কবিতায় তার দেশাত্মবোধ উচ্চকিত ভাষারূপ লাভ করেছেÑ ‘ভীষণ অস্থির এই বাড়ি/সূর্যসেন প্রীতিলতা ইলামিত্র দুঃখিনী মাসিমা/তেভাগা আগুনে পোড়া গরিব আঙুল/ক্ষুধার্ত আকাশ ঠোঁটে/ব্যাকুল দাঁড়িয়ে থাকা/দুঃখি ছায়াময় এই বাড়ি’ (প্রিয় বাড়ি/ বিকেলে জলপাই রোদে)।

১৯০৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন কবির আমূল সত্তাকে আলোড়িত করেÑ ‘প্রিয় স্পর্শে ঝলসায় আগুন-করাত/শোকের ব্যান্ডেজে অবরুদ্ধ মেডিক্যাল/কুয়াশার কাঁটাতারে কালো ব্যাজ পরে/ডাকে ছানিপড়া ভোর।’ (ফ্ল্যাশব্যাক : ১৯৫২/ ওই)

মুক্তিযুক্ত পাশার কবিতার অন্যতম প্রধান প্রসঙ্গ। পাশার কবিতার ব্যাপক আয়তনজুড়ে মুক্তিযুদ্ধের বিস্তার। মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ বিক্ষত সময় তার কবিতায় বিধৃতÑ ‘ডুবে যায় আমাদের বাড়ি/ঘরগুলো ছায়াগুলো/আমাদের নিজস্ব থাকে না/বর্বর মুদ্রায় ভাঙে স্বাপ্নিক আকাশ/মধ্য দুপুর শঙ্কিত সূর্যাস্তের ঠোঁটে/নুয়ে পড়ে।’ (জার্নাল; একাত্তর/ ওই)

সোহরাব পাশার কবিতার টেক্সট থেকেই অনুধাবন করা যায়, শৈল্পিক আড়াল তৈরিতে কতটা যতœশীল। এটি কবিতার নির্মাণকলার অন্যতম প্রধান শর্তও বটে। এই শর্তপূরণে যথোচিত প্রকল্পনা ও প্রযোজনায় তিনি সনিষ্ঠ। শিল্প তো মানুষের জন্যইÑপ্রথমত এ বিশ্বাসকে মর্মমূলে ধারণ করেই অতঃপর তিনি শিল্পের দায় মেটাতে অভিনিবিষ্ট। পাশার কাব্যভাষা সম্পূর্ণ আধুনিক। ছন্দের ক্ষেত্রে অক্ষরবৃত্তই তার প্রধান অবলম্বন। শব্দের স্বাচ্ছন্দ্য, ধ্বনির দ্যোতনা ও পঙ্্ক্তির বিন্যাসে তিনি নান্দনিক ব্যঞ্জনা সৃষ্টিতে তৎপর। উপমা উৎপ্রেক্ষা রূপক প্রতীক সংকেত চিত্রকল্প-নির্মাণ ও পুরাণের যথাপ্রয়োগে সিদ্ধহস্ত। পাশা সহৃদয়হৃদয়সংবেদী কবি। আবেগ ও মননের রসায়নে তার কবিতা পাঠক হৃদয়ে সঞ্চারিত করে গভীর সংবেদনা।

উপমা, উৎপ্রেক্ষা, রূপক ও চিত্রকল্প নির্মাণে পাশা পারঙ্গমতার পরিচয় দিয়েছেন। কবি অজস্র রূপক প্রয়োগ করেছেন তার কবিতায়। এক কথায় ‘রূপকের কবি’ খেতাবে ভূষিত করা যায় কবি পাশাকে।

পাশা কলম হাতে করতেই রূপক এসে ধরা দেয় সূচ্যগ্র নিবের ডগায়; চোখে তার ‘স্বপ্নবৃক্ষ’, ‘বৃষ্টির ফুল’, তৃষ্ণার্ত আঙুলে জড়ায় ‘মুগ্ধতার সুতো’, ‘নক্ষত্রের আংটি’। প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ এ কবির প্রায় সমূহ রূপকই নিসর্গের উদার কোমল থেকে তুলে আনা। কতিপয় আহরণÑ জোছনার চিল/বৃষ্টির ফুল/নক্ষত্রের জুঁই/চোখের নদী/রোদের ক্যামেরা/মুদ্রার নক্ষত্র/কুয়াশার কাঁটাতার/বিষাদ-পাথর/রাত্রির হাঙর/সূর্যাস্তের ঠোঁট/স্বপ্নবৃক্ষ/মুগ্ধতার সুতো/ঘৃণার ঘুঙুর/আশালতা/রোদের ওড়না/হাসির কুসুম/রোদের চাবুক/আঙুলের বাতিঘর/আলোর হরিণ/স্মৃতির পাখিরা/রাত্রিদের কম্প্যুটার/স্মৃতির করাত/মেঘের চশমাপরা মেয়ে/জ্যোৎস্নার রোদ্দুর/জ্যোৎস্নার বকুল/নক্ষত্রের আংটি/বেদনার বিষণœ প্রদীপ/মেঘের মেয়েরা/মেঘের বাদুর ইত্যাদি।

সোহরাব পাশার কবিতায় কখনো কখনো বিচিত্র অনুপ্রাসের ব্যঞ্জনা লক্ষণীয়। যেমনÑ ক. মনসার চোখে ধুলো দিয়ে নিপুণ মুদ্রায় খোলে নীলমণি/ খ. আজকাল লাল বরফের লাচ্ছি খাচ্ছি/গ. গোল বেঁধে গোল পৃথিবীর পথে ভূগোল খোঁজে দেহ যায়/ঘ. জল হাসে জল নাচে জলের ওপর/ঙ. কাইতানে কানতা জাগিয়ে হাঁটে চতুর কৈমাছ।

ঐতিহ্যপ্রেমিক কবি সোহরাব পাশা। মিথ ও উল্লেখের সার্থক প্রয়োগ ঘটেছে তার কবিতায়। পাশার কবিতায় ব্যবহৃত মিথিক চরিত্র ও উল্লেখাবলিÑ প্রমিথিউস, আফ্রোদিতি, ক্লিওপেট্রা, যীশু, রাধা, কৃষ্ণ, কালিদাস, কাহ্নপা, ঈশপ, বেহুলা, হরপ্পা, বিদর্ভ, বৃন্দাবন, ওডিসি, মেঘদূত, ‘ক্লেদজ কুসুম’, গীতালি, গীতাঞ্জলি, গীতবিতান।

কবিতা এমন এক নান্দনিক শিল্প, যাতে জড়িয়ে থাকে রহস্যের অবগুণ্ঠন। কিন্তু বাংলা কবিতার সাম্প্রতিক প্রবণতা আব্রুহীনতা। এর ফলে কবিতা হয়ে ওঠে নেহাত খোলামেলা, হারায় তার দুর্লভ ঐশ্বর্য ও গোপন সৌরভ। শুকনো জলাশয়ের খটখটে বুকে দাঁত কেলিয়ে হাসে খাটাশরোদ্দুর; যা পাঠে তৃষ্ণাবারির অনটনে হাহাকার করতে থাকে কাব্যরসিকচিত্ত। তবে আশ্বস্ত হই, কেউ কেউ (অঙ্গুলিমেয় তারা) সাম্প্রতিক কবিতা থেকে হারিয়ে-যেতে-বসা রহস্যময়তার অনিঃশেষ অভিঘাত ও শিহরণের স্বাদ পাইয়ে দিতে চান। কবি সোহরাব পাশা তাদেরই অন্যতম। কবিতার অভীষ্ট সন্ধানে নিবিষ্ট চিত্তে তিনি আত্মনিবেদিত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close