বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

বেনাপোল-খুলনা ও বেনাপোল-ঢাকা ট্রেন

প্রতিদিন পাচার লাখ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য

চলছে তীব্র গরম। আর এই গরমে প্রতিদিন শত শত শীতের কম্বল, বিভিন্ন চকলেট, প্রসাধনী দ্রব্যাদি সীমান্তের অবৈধ পথে চোরাকারবারিরা নিয়ে আসছে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকা থেকে। পরে এসব পণ্য যশোর, খুলনা, নোয়াপাড়া, দৌলতপুর ও খুলনা থেকে আসা শতাধিক চোরাকারবারি বেনাপোল-খুলনা-মোংলাগামী কমিউটার ট্রেন ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ও বেনাপোল-ঢাকাগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ এ করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের গন্তব্যে।

প্রতিদিনের বেনাপোল রেলস্টেশনের দৃশ্য এটি। রেল পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, আনসার সদস্য ও থানা পুলিশের আদায়কারী দালালের সহযোগিতায় প্রতিদিন এ কারবার চলছে। আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের চোখের সামনে এ ব্যবসা চললেও তারা এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে। এসব ট্রেনে কোনো তল্লাশি চালানো হয় না। যাত্রীদের সামনেই চোরাচালানিদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে টাকা নিতে দেখা যায় এসব বাহিনীর লোকদের। মাঝে মধ্যে বিজিবি সদস্যরা এসে ঘুরে ফিরে চলে যায়।

সড়ক পথে বেনাপোল চেকপোস্ট সীমান্ত পার হলে ঢাকা-বেনাপোল সড়কের আমড়াখালি নামক স্থানে বিজিবি চেকপোস্ট, বেনাপোল বন্দর থানা, নাভারণ হাইওয়ে ফাঁড়ি, শার্শা থানা, ঝিকরগাছা থানা অতিক্রম করা ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ ট্রেনের চোরাই পণ্য পরিবহন অনেক সহজ লভ্য ও খরচ কম। বেনাপোল থেকে যশোর, খুলনা আর কোথাও বাধা নেই, নেই কোথাও বিজিবি বা পুলিশ।

বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন বেনাপোল থেকে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ও বিকেল ৫টায় দুইবার যাওয়া আসা করে থাকে। আর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুর ১টায় ছেড়ে যায় বেনাপোল থেকে। এসব ট্রেনে কম্বলের সঙ্গে মাদক, থ্রি-পিস, চকলেট, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী, ইমিটেশন গহনা, সিগারেট, মোবাইল, কাপড়, কিশমিশ, নিম্নমানের চা পাতা, আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধসহ বড় বড় চালান নির্বিঘ্নে নিয়ে যাচ্ছে যশোর খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে। ফলে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। এসব পণ্য আগে বৈধপথে আমদানি হয়ে আসলেও এখন সবই আসছে চোরাই পথে।

নতুন করে গজিয়ে ওঠা বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকার বিভিন্ন দোকানসহ আশপাশের গ্রামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। সকালের ট্রেনে শত শত মহিলা চোরাকারবারি চলে আসে বেনাপোল রেলস্টেশনে। সেখানে নেমে ইজিবাইকে করে চলে যায় চেকপোস্টসহ বিভিন্ন এলাকায়। সেখান থেকে চোরাই মালামাল কিনে আবারও ইজিবাইক ভর্তি করে মাল নিয়ে আসে রেলস্টেশনে। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের বিভিন্ন বগিতে তোলা হয় এসব পণ্য। সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কেটে সিটে বসতে পারে না। ট্রেনের বাংকার, সিটের নিচে, এমনকি সিটের ওপরে রেখে দেয় এসব মালামাল। তবে সবচেয়ে ভারতীয় কম্বল বেশি আসে। প্রতিদিন কয়েক হাজার পিস ভারতীয় কম্বল চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close