প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

নাতির কাঁধে ভর দিয়ে এসে ভোট

একজন অশীতিপর, আরেকজন শতবর্ষ পার করেছেন। এমন দুজন নানা তাদের নাতির কাঁধে ভর দিয়ে গেছেন ভোট কেন্দ্রে, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে। জীবন সায়াহ্নে এসে ভোট উৎসবে শামিল হয়েছেন এই দুই বৃদ্ধ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি জানান, মাগুরার শালিখায় শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে ছুটে আসছেন প্রতিবন্ধী, বয়স্কসহ বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। এমনই বয়স্ক ভোটার হলেন আড়পাড়া ইউনিয়নের কেষ্টপুর গ্রামের ৮৫ বছর বয়সি মোতালেব মোল্লা। তিনি এক হাতে লাঠির ওপর এবং অপর হাত নাতির কাঁধে ভর দিয়ে ভোট দিতে আসেন।

মোতালেব মোল্লা বলেন, ভোট দেওয়া আমার কাছে একটি আনন্দের ব্যাপার। আর এই আনন্দ আমি প্রতিবারই উপভোগ করি। ভোট দিতে আমার অনেক ভালো লাগে। তাই আমি অনেক কষ্ট করে হলেও ভোট দিতে এসেছি। ভোট দিয়ে অনেক ভালো লেগেছে। একই ইউনিয়নের গোপালগ্রামের প্রতিবন্ধী মোমেন শিকদার এসেছিলেন দুটি ক্রাচের ওপরে ভর দিয়ে। সকালের কুয়াশা মাড়িয়ে ভোট দিয়ে তিনি অনেক আনন্দ পেয়েছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

মোমেন শিকদার বলেন, ‘আমি প্রতিবারই ভোটকেন্দ্রে আসি। ভোট দিতে আমার অনেক আনন্দ লাগে।’ এ বছর শালিখা উপজেলার মোট ৫৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। যেখানে ভোটার ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৭০ জন। আড়পাড়া মহিলা কলেজ, চুকিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুমারকোটা আলিম মাদরাসা, পুকুরিয়া সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়পাড়া বালিকা বিদ্যালয়, আড়পাড়া আলিম মাদরাসাসহ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, অসুস্থ পুরুষ-মহিলারাও ভোট দেন।

একপ্রকার উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল ভোটগ্রহণে। কেন্দ্রের বাইরে চুরি-ফিতাসহ বিভিন্ন জিনিসের পশরা নিয়ে বসেন অনেক দোকানি। এছাড়া ভোট দিতে এসেছেন আড়পাড়া ইউনিয়নের গোপালগ্রামের বীরেন্দ্রনাথ গাঈন নামে এক প্রায় শতবর্ষী। বীরেন্দ্রনাথ গাইন বলেন, ‘অনেক দিন পরপর ভোট দিতে আসি। ভোট দেওয়া আমার কাছে একটা আনন্দের ব্যাপার। তাই আমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই ভোট দিতে এসেছি এবং সুন্দরভাবে ভোট দিয়েছি।’

অপর একজন বৃদ্ধা হলেন মাজু বিবি। তিনি বলেন, ‘আসতে অনেক কষ্ট। তবু এসেছি শুধু একটা ভোট দিতে।’ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে এসেছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দান করেছেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪০ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে বলেও জানান তিনি।

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি জানান, ভোলার চরফ্যাশনে ১১০ বছর বয়সে নাতির হাত ধরে ভোট দিয়েছেন রুহুল আমিন দেওয়ান। সকাল সাড়ে ১০টায় চরফ্যাশনে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডেও টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে তিনি নিজের ভোট দেন। রুহুল আমিন ওই গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে।

নাতি তরিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই নানা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। তার এই ইচ্ছা পূরণে সাড়ে ১০টায় তাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসি। নিজের পছন্দেও প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে বড় খুশি তিনি।

রুহুল আমিন জানান, রাতেই নাতিকে ভোট দিতে যাওয়ার কথা বলে রেখেছি। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার আরমান কিবরিয়া জানান, বৃদ্ধ ও পঙ্গু ব্যক্তিরা ভোটকেন্দ্রে এলে কর্মরত আনসার সদস্য ও পুলিশ সদস্যরা তাদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য সহযোগিতা করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close