ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

বিদায়বেলায় যে বার্তা দিলেন ওয়ার্নার

১১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলে থামলেন ডেভিড ওয়ার্নার। চিরদিনের মতো বিদায় নিলেন সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে। এমন দিনে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ধবলধোলাই করার স্বাদ পেয়েছে তার দল অস্ট্রেলিয়া। লাল বলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষটা বলা যায় নিজের চাওয়া মতোই পেয়েছেন এ অজি ওপেনার। ঘরের মাঠ সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে শনিবার ‘গার্ড অব অনার’ পান ওয়ার্নার। তার বিদায়ি পারফরম্যান্স ছিল উজ্জ্বল, ৫৭ রান করে লেগ-বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরার সময় পাক স্পিনার সাজিদ খানও তাকে স্যালুট জানান।

ম্যাচ শেষে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্নারের জন্য বিদায়ি সংবর্ধনার আয়োজন করে। তবে পুরো ম্যাচ জুড়েই সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ছিল ওয়ার্নারময়। ব্যাট-প্যাড নিয়ে মাঠে নামার সময়, ক্রিজ ছাড়া কিংবা ম্যাচ শেষেও দর্শকরা দাঁড়িয়ে তাকে করতালিতে ১৩ বছরের টেস্ট অধ্যায়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

পরে স্বদেশি সংবাদমাধ্যমকে টেস্টের বিদায়ি সাক্ষাৎকার দেন ওয়ার্নার। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি চাই রোমাঞ্চকর ও বিনোদনদাতা হিসেবে সবাই আমাকে মনে রাখুক।’ একই সঙ্গে সাদা জার্সি খুলে রাখার মুহূর্তে পাকিস্তানের বিপক্ষে অজিদের ৩-০ ব্যবধানের জয়কে তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। ওয়ার্নার বলেন, ‘এটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার চেয়েও বিশেষ কিছু। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়, অ্যাশেজ ড্র এবং এরপর বিশ্বকাপ। এখানে এসে ৩-০ ব্যবধানে জয় অসাধারণ অর্জন। দুর্দান্ত সব ক্রিকেটারের সঙ্গে থাকতে পারাটা গর্বের মনে করি।’

৩৭ বছর বয়সি এ তারকা ক্রিকেটার আরো বলেন, ‘নেটে ও জিমে তারা অনেক পরিশ্রম করে। অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে ফিজিও, স্টাফরাও। কৃতিত্ব তাদের দিতেই হবে। তারা অসাধারণ। তাদের আর কখনো নেটে মোকাবিলা করা হবে না।’

নিজের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ওয়ার্নার বলেন, ‘জীবনের বড় একটা অংশ তারা (গ্যালারিতে উপস্থিত স্ত্রী-সন্তান, মা ও বাবা), তাদের সমর্থন ছাড়া এতদূর আসা হতো না। মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা, আমার ভাই স্টিভের প্রতিও, যাকে অনুসরণ করেছি সবসময়।’ স্ত্রীকে নিয়ে তার বক্তব্য, ‘ক্যান্ডিস (স্ত্রী) আমার পুরো যাত্রায় সঙ্গী ছিল। সবাই মিলে এটি একটি সুন্দর পরিবার, যাদের আমি মৃত্যুর আগপর্যন্ত কাছে পেতে চাই। এর বেশি বলা সম্ভব নয়, আমি আবেগতাড়িত হয়ে যাব। কিন্তু ধন্যবাদ ক্যান্ডিস, তুমি যা করেছ, তুমিই আমার বিশ্ব এবং আমি এর প্রশংসা করি।’

কেন মানুষ ওয়ার্নারকে মনে রাখবে- তার জবাবে বিদায়ি ওপেনার বলেন, ‘আমি চাই আমার দেওয়া রোমাঞ্চকর, বিনোদন এবং সবার মধ্যে যে হাসিটা ছড়িয়েছি, তা যেন সবাই মনে রাখে। আশা করি যে পথে আমি খেলে এসেছি, সন্তানরাও যে পথেই আমাকে অনুসরণ করুক।’ তিনি যোগ করেন, ‘সাদা বল থেকে লাল বলের ক্রিকেট, এটাই আমাদের খেলার চূড়ান্ত পর্যায়। তাই আমি টেস্ট ক্রিকেটের জন্যও তাদের পরিশ্রমী দেখতে চাই, কারণ এটিও অন্য ফরম্যাটের মতো সমান আনন্দদায়ক।’

দীর্ঘদিন টেস্টে ফর্মহীন ছিলেন ওয়ার্নার। সে কারণে কম সমালোচনা শুনতে হয়নি তাকে। সর্বশেষ অ্যাশেজেও ছিলেন ফর্মের বাইরে। তবুও গত জুনে সিডনি বিদায়ি টেস্ট খেলতে চাওয়ার যে ইচ্ছা জানিয়েছিলেন, তা দারুণভাবে আয়োজন করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ১১২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৪৪.৫৯ গড়ে ওয়ার্নার ৮৭৮৬ রান করেন। করেছেন ২৬ সেঞ্চুরি ও ৩৭ হাফসেঞ্চুরি। টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ওয়ার্নার। টেস্টের রান সংগ্রহে ম্যাথু হেইডেন, মার্ক ওয়াহ, মাইকেল ক্লার্কের মতো কিংবদন্তিদেরও পেছনে ফেলেছেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close