ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ
ভেন্যু নয়, ফরমেট নিয়ে দ্বিধা
আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সফরে ভারত নয়, আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। উত্তরাখ-ের দেরাদুনে আসন্ন সিরিজটা আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আফগানরা। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) অনুমোদন ও চুক্তি সাপেক্ষে উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডা স্পোর্টস কমপ্লেক্স গ্রাউন্ড যে রশিদ-নবি-স্ট্যানিকজাইদের ‘ঘরের মাঠ’ হয়ে উঠেছে।
আবার ক’দিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন অন্য কথা। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে তিনি জানিয়েছেন দেরাদুনের বিকল্প ভেন্যু খুঁজতে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজটার সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে ব্যাঙ্গালুরু কিংবা কলকাতার কথা বলেছেন বিসিবি প্রধান। ভেন্যু সংকটই এখনো নিরসন হয়নি। এরই মধ্যে বেড়–ল আরেক খবর। বিসিবি ক্রিকেট পরিচলনা প্রধান আকরাম খান জানালেন ভেন্যু নয়, আসল সমস্যা ফরমেট নিয়ে! আকরাম দাবি করলেন ভেন্যু নিয়ে যে সংকটের কথা উঠেছে সেটা তার অজানা।
তবে বাংলাদেশ দ্বিধায় আছে আফগানিস্তানে সঙ্গে কোন ফরমেটে খেলবে তা নিয়ে। ইতোমধ্যেই বিসিবিকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার প্রস্তাব দিয়েছে আফগানরা। কিন্তু এখনই তাদের নিশ্চিত করতে পারেনি বিসিবি। টি-টোয়েন্টি নাকি ওয়ানডে কোন ফরমেটে খেলবে বাংলাদেশ সেটার উত্তর পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
আসলে নিজেদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়েই ভাবছে বাংলাদেশ। এ নিয়েই দ্বিধা। কারণ, গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল টাইগাররা। মার্চে আবার নিদাহাস ট্রফি হয়েছে কুড়ি ওভারের ফরমেটেই। তাছাড়া অনেক দিন ধরে ওয়ানডে খেলা হচ্ছে না। পক্ষান্তরে কদিন আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বেশ কয়েকটা ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে আফগানরা। সবমিলিয়ে একটা ভাবনার মধ্যে পড়ে গেছে বিসিবি।
আফগানিস্তান সফর শেষ করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে ক্যারিবীয়দের সঙ্গে টেস্ট দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের সফর। সবমিলিয়ে হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন। কাল সংবাদ সম্মেলনে আকরাম বলেছেন, ‘যতটুকু জানি ভেন্যু নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। আমরা কোন সংস্করণে খেলতে চাই সেটাই হচ্ছে ব্যাপার। ওরা ওয়ানডে খেলতে চায়। তবে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা আমাদের সুবিধা অনুযায়ী খেলতে চাইব।’
ভেন্যু, ফরমেট কিছু ঠিক না হলেও সিরিজের সূচি প্রায় নির্ধারণ হয়ে আছে। জুনের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজটা। ওই সফরে যাওয়ার আগে কাল দারুণ একটা সংবাদ পেয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আরেকটু ছোট করে বললে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়রা। এ মাসেই বেতন বাড়ছে সাকিব-মাশরাফি-তামিমদের। অথচ, বছর ঠিক এই সময়েই ক্রিকেটারদের বেতন ও ম্যাচ ফি প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়েছিল বিসিবি!
আগামীকাল বিসিবি পরিচালনা কমিটির বৈঠক। সেখানেই খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির সুপারিশ করা হবে। তবে বেতন বাড়লেও কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারের সংখ্যাটা ১৬ থেকে কমে যাচ্ছে। বাদ পড়ছেন কয়েকজনই। কিন্তু এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। আকরাম বলেছেন, ‘গতবার আমরা প্রায় ১০০ শতাংশ বাড়িয়েছিলাম। ধীরে ধীরে আরের বাড়াব। আমরা প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত করতে পারিনি। কাল (আজ) ঠিক করে ফেলব। তবে এটা ঠিক, চুক্তিতে খেলোয়াড় কমবে। অনেক কিছু বিবেচনা করতে হচ্ছে। খেলোয়াড়ের সংখ্যা কম থাকলে ভালো হয়।’
বিসিবির একটি সূত্রের খবরÑ দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা অবশ্য কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকছেন। সেই হিসেবে মুশফিকুর রহিমের বেতনও বাড়ছে। গত বছর এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানই নিজেদের পারিশ্রমিক নিয়ে হতাশার কথা বলেছিলেন। তাদের সেই হতাশা দূর করে বেতন দ্বিগুন করে দেয় বিসিবি। এবার অবশ্য শতভাগ বেতন বাড়ছে না তাদের। বৃদ্ধির হারটা আরো অনেক কম। বাড়তি বেতনের সুখবরের দিন একটা দুঃসংবাদও শুনতে হয়েছে মুশফিককে। ফুটবল খেলতে গিয়ে অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়েছেন তিনি। তবে চোটটা গত শুক্রবারের। কাল বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীকে দেখানোর পর তার ইনজুরির খবরটা আসে। এই চোটের কারণে আজ থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ড খেলতে পারবেন না মুশফিক।
"