প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
সন্তানের গায়ের রং নিয়ে উদ্বেগ ছিল রাজপরিবারে
সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ রাজবধূ মেগান
ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মারকেল রাজপরিবারে যুক্ত হওয়ার পর আত্মহত্যার চিন্তা করেছিলেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি রাজতন্ত্রের অভ্যন্তরে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছেন। মেগানের অভিযোগ, মানসিক সংকটের সময় তাকে সাহায্য করতেও অস্বীকৃতি জানানো হয়, মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয় এমনকি তার অনাগত সন্তানের ত্বকের রং নিয়েও রাজপরিবারে উদ্বেগ ছিল।
রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মারকেলের সাক্ষাৎকার গত রবিবার সিবিএস টেলিভিশনে প্রচার হয়। মার্কিন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রের সঙ্গে এই সাক্ষাৎকারে তিনি রাজপরিবারের স্ত্রী হিসেবে নিজের নানা অভিজ্ঞতা আর উপলব্ধির কথা তুলে ধরেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন প্রিন্সেস ডায়ানার ছেলে প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান। তারা ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করছেন। মার্কিন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি রাজপরিবারের সবার সঙ্গে সময় কাটানো, তাদের দায়িত্ব গ্রহণ, এত কম সময়ে দায়িত্বের অব্যাহতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
শ্বেতাঙ্গ বাবা আর কৃষ্ণাঙ্গ মায়ের সন্তান মেগান মারকেল ওই সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ উত্থাপন করেন। নিজে গর্ভবতী থাকার সময়ে ট্যাবলয়েড আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন আলাপচারিতা নিয়ে নিজের ওপর প্রভাব সম্পর্কে মেগান বলেন, ‘আমার শুধু মনে হয়েছিল আর বাঁচতে চাই না। আর সেটা খুব স্পষ্ট ও বাস্তব এবং ভীতিকর চিন্তা ছিল।’ আত্মহত্যার চিন্তা করেছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মেগান বলেন, ‘হ্যাঁ। সেটা খুব স্পষ্ট চিন্তা ছিল।’
৩৯ বছর বয়সি মেগান মারকেল বলেন তার সন্তান আর্চির ত্বকের রং কতটা কালো হবে তা নিয়েও রাজপরিবারে উদ্বেগ ছিল। রাজপরিবারের কারা এই ধরনের উদ্বেগের কথা বলেছিল, তা প্রকাশ করতে চাননি মেগান।
মেগান বলেন, ‘আমার অন্তঃসত্ত্বার কয়েক মাসে ঘুরেফিরে কয়েকটি কথায় আসত- তুমি নিরাপত্তা পাবে না, কোনো খেতাবও পাবে না’। আর যখন ওর জন্ম হবে, ওর গায়ের রং কতটা কালো হতে পারে সেসব নিয়ে তাদের আলাপ আর উদ্বেগও তো ছিলই।’
সাক্ষাৎকারে মেগান বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক কিছু হারিয়েছি। রাজপরিবার থেকে মিথ্যাচার এভাবে চলতে থাকলে আমরা যে চুপ থাকব, এটা হয় না।’
উইনফ্রে মেগানকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনাদের এই আলোচনা তো রাজপরিবারের সদস্যরা শুনবেন। সেক্ষেত্রে এই বিষয়ে আপনি কেমন বোধ করছেন? উত্তরে মেগান বলেন, ‘আমি জানি না তারা কী মনে করছেন। তবে আমাদের সম্পর্কে মিথ?্যাচার এভাবে চালিয়ে গেলে আমরা সব সময় নীরব ভূমিকা পালন করব না।’
এদিকে তাদের সম্পর্কে কী মিথ্যাচার হচ্ছে, সেটি তিনি প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে জানা গেছে, মেগানের বিরুদ্ধে কেনসিংটন রাজপ্রাসাদে কর্তৃত্ব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, মেগান দুই রাজকর্মচারীকে গৃহকর্ম থেকে বের করে দিয়েছেন। আরেকজনকেও তিনি ধমকে দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ব্রিটিশ সিংহাসনের ষষ্ঠ উত্তরাধিকার হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ ওঠে। ওই বছরই মে মাসে বিয়ের পর থেকে কেনসিংটন প্যালেসেই বাস করছিলেন মেগান। এদিকে, হ্যারি ও মেগানের নামে কারা মিথ্যাচার করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বাকিংহাম প্যালেস থেকে জানানো হয়েছে।
"