আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৪ এপ্রিল, ২০১৯

লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

চাপে পড়ে মোদির মুখে আখ আর পেঁয়াজের কথা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভা ছিল পিম্পলগাঁও ও নন্দুরবার এলাকায়। সেখানকার পেঁয়াজচাষিদের কান্না অনেক দিনের। চাষের যা খরচ, তাতে লাভের আশা তো দূর, ফসল বিক্রি করতে বাজারে আনার টাকাই ওঠছে না। শুধু সন্ত্রাস মোকাবিলার কথা বললেই চিড়ে ভিজবে না। মঞ্চের ও পাশে বসে অনেক মুখ হাজারো প্রশ্ন নিয়ে। সে কথা বোঝাতেই গত সোমবার মহারাষ্ট্রের ভোট প্রচারে পেঁয়াজ আর আখচাষিদের দুর্দশা নিয়েও বলতে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। টেনে আনতে হলো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালের প্রসঙ্গও। তবে এই সব ব্যাপারেই সংকটের দায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেস ও এনসিপির ওপরেই চাপিয়ে দিলেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের নাশিক, ডিন্ডোরি, ধুলে কেন্দ্রগুলোর বিজেপি-শিবসেনা প্রার্থীদের জন্য গতকাল মঙ্গলবার ভোটপ্রচারে গিয়েছিলেন মোদি। নাশিকে রয়েছে হ্যালের একটি কারখানা। রাহুল গান্ধীসহ বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, রাফালের বরাত হ্যালকে দেননি মোদি, দিয়েছেন অনিল অম্বানিকে। জবাবে গত সোমবার মোদির পাল্টা দাবি, হ্যালকে ধ্বংস করেছে বিরোধীরাই। বরং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়িয়েছে তার সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ছিল পিম্পলগাঁও ও নন্দুরবার এলাকায়। এখানকার পেঁয়াজচাষিদের কান্না অনেক দিনের। চাষের যা খরচ, তাতে লাভের আশা তো দূর, ফসল বিক্রি করতে বাজারে আনার টাকাই ওঠছে না। কখনো কখনো পেঁয়াজচাষিরা প্রতিবাদ জানাতে স্বল্প লাভের অঙ্ক প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়ে বিষয়টিকে গোটা দেশের সামনে এনে দিয়েছেন। এই চাপের মধ্যেই মোদি গতকাল মঙ্গলবার এখানে দাবি করেন, পেঁয়াজ মজুদ করার ব্যবস্থা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে তার সরকার। ফসল পরিবহনের খরচ যাতে কমে, সেই চেষ্টাও হচ্ছে। পাঁচ বছর সরকার চালানোর পরে এ দিন তার দাবি, কংগ্রেসই ফসলের দাম পেতে দেয়নি চাষিদের। দালালদের জন্য কাজ করে গিয়েছে তারা। মোদির মন্তব্য, দালালদের বিরুদ্ধে আমিই লড়ছি। আমাদের সরকার দালালরাজ শেষ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর আখচাষিদের প্রতি তার আশ্বাস, তাদের সমস্যা মেটাতে ইথানল উৎপাদনের কথা ভাবা হবে। মোদির অভিযোগ, কংগ্রেস আর এনসিপির জন্যই এতদিন এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো যায়নি। তেল আমদানি হলে এদের নেতারা ঘুষ পেতেন। ইথানল হলে তাদের টাকা কমে যাবে। সংরক্ষণ নিয়েও বিরোধীরা অপপ্রচার করছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা ক্ষমতায় এলে সংরক্ষণের সমস্যা হবে বলে বিরোধীরা প্রচার করছেন। কিন্তু মোদি যতক্ষণ রয়েছে, কেউ বাবা সাহেব অম্বেডকরের দেওয়া সংরক্ষণ তুলে দিতে পারবে না। অরণ্যবাসীদের উদ্দেশ্যে মোদির আশ্বাস, যে জমিতে তারা চাষ করছেন, তাতে কেউ হাত দিতে পারবে না। অনেকেই মনে করছেন, কেন্দ্রের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রেও বিজেপি সরকারে রয়েছে। ফলে এই সংকটের দায় তাদের ওপর আসছে।

এ নিয়ে এতটাই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে যে মুখ খুলতে হয়েছে মোদিকে।

রুটি-রুজির এই সমস্যা নিয়ে নিজের মতো করে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার কথাও ছিল মোদির মুখে। তার অভিযোগ, কংগ্রেস জমানার মতো নয়, জঙ্গিদের জোরালো জবাব দিয়েছে তার সরকার। মোদির মন্তব্য, ২০১৪-এর আগে দেশের নানা প্রান্তে মুম্বাই, পুনে, বারাণসী, অযোধ্যা কিংবা জম্মুতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে যেত। কংগ্রেস-এনসিপির সরকার শোকসভা করত। দুনিয়ার সামনে কেঁদে বলত, পাকিস্তান এসব ঘটিয়েছে। আর চৌকিদার কী করছে? এ দিন রাজস্থানের উদয়পুরেও সন্ত্রাস মোকাবিলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের ঘরে গিয়ে আঘাত করছে মোদি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close