বদরুল আলম মজুমদার

  ০৫ মে, ২০২৪

বিএনপিতে বহিষ্কারের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে

দলীয় নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় প্রথম ধাপে ৮৯ জন প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার দ্বিতীয় ধাপে আরো ৬১ জন প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আসন্ন দুই ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৫০ জন নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করল বিএনপি। বাকি আরো দুইধাপে বহিষ্কারের মুখে পড়তে পারেন একাধিক বিএনপি নেতা। বহিষ্কারে এ তালিকা বেড়েই চলছে। এ নিয়ে দলে অস্বস্তি বাড়ছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে আরো কঠোর হবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ১৫০ জন নেতাকে বহিষ্কারের পরও নির্বাচন থেকে নেতাদের দূরে রাখতে পারছে না বিএনপি। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বহিষ্কার করার পরও যে নেতাকর্মীরা বহিষ্কৃতদের পক্ষে নির্বাচনের কাজ করছেন, তাদের বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত কি হবে- তা খোলাসা করেনি বিএনপির হাইকমান্ড।

অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপে অংশ নেওয়া ৬১ নেতাকে শোকজ করেছিল বিএনপি। নোটিসের কেউ উত্তর দেয়নি। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন করে আরো ৬১ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। গতকাল শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির যে নেতারা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদেরকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৬, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৯ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৬ জন।

বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নেতাদের তালিকা আরো দীর্ঘ হবে বলে ধারণা করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এর মধ্যেই উপজেলা নির্বাচনে আসন্ন প্রথম ও দ্বিতীয়- এ দুই ধাপে ১৫০ জন নেতা বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। দল থেকে বহিষ্কার ও শোকজ করেও নির্বাচন থেকে এ নেতাকর্মীদের ফেরানো যাচ্ছে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দাঁড়ানো নেতাদের মধ্যে আদর্শবোধ নেই।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম দফার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৮৯ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের জন্য ৬১ জন নেতাকে নতুন করে বহিষ্কার করে বিএনপি। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন হবে। সেই পর্বগুলোয় বিএনপির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।

বহিষ্কার ও শোকজের পরও কেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এ নির্বাচন থেকে ফেরানো যাচ্ছে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম বলেন, লোভ-লালসায় পড়ে আমাদের এসব নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের আদর্শ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিদ্ধান্তের ভালো-খারাপ উভয় দিক আছে। তারপরও সবাইকে দলীয় এ সিদ্ধান্ত মানা উচিত।

বিএনপি নেতাদের একাংশ মনে করেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতায় হতাশা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিষ্ক্রিয় করেছে। কিন্তু জনসমর্থন আছে, মাঠের এমন নেতাদের নিজ এলাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এ উপজেলা নির্বাচন।

জানা গেছে, বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির অনেক নেতাকর্মী। এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি দলটির নীতিনির্ধারকরা। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলার কমিটির শীর্ষ নেতারা উপজেলা নির্বাচন থেকে বিরত থাকার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছেন। জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম জানান, তার সংগঠন থেকে দুজন উপজেলা পরিষদে ভোট করছেন। এ ২ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close