নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

নির্বাচনী প্রতীকের যত গল্প

নির্বাচনে বিভিন্ন প্রতীক রাজনৈতিক দলের পরিচয়স্বরূপ। নৌকা, লাঙ্গল আমাদের প্রায় সবার চেনা মার্কা- চেনা এসব মার্কার বাইরেও আরো অনেক মার্কা বা প্রতীক রয়েছে। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই প্রতীক হিসেবে ঈগল বেছে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি, কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন- এমন আলোচিত হেভিওয়েট প্রার্থীরা ঈগল প্রতীকের দিকে ঝুঁঁকেছেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী রয়েছেন ১৮৯৫ জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ৩৮২ জন। তাদের মধ্যে ১৫২ প্রার্থীই ঈগল প্রতীক বেছে নিয়েছেন।

কারণ ঈগলের ‘শক্তি ও সামর্থ্যরে’ প্রতীকী উপস্থাপন এবং ট্রাকের সঙ্গে মানুষের পরিচিতির বিষয়টি কাজে লাগিয়ে এসব প্রার্থী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিতের আকাঙ্ক্ষা করছেন। বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঈগল ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কেউ কেউ ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হেভিওয়েট নেতা। তাদের অনেকের সামনে দাঁড়াতেই পারছে না নৌকার প্রার্থীরা।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। এ দলগুলোর মার্কা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। এবার প্রতীক ছিল- আপেল, কলার ছড়ি, কুড়াল, আম, কাঁঠাল, কুঁড়েঘর, উদীয়মান সূর্য, কাস্তে, কোদাল, একতারা, কুমির, খাট, ঈগল, কবুতর, কুলা, খেজুরগাছ, গরুর গাড়ি, দালান, মাথাল, গাভী, দেয়ালঘড়ি, মিনার, গামছা, ধানের শীষ, মোমবাতি, গোলাপ ফুল, নোঙ্গর, রকেট, ঘণ্টা, নৌকা, রিকশা, চাকা, ফুলকপি, লাঙ্গল, চাবি, ফুলের মালা, শঙ্খ, চেয়ার, বাঘ, সিংহ, ছড়ি, বটগাছ, স্যুটকেস, ছাতা, বাইসাইকেল, হাত (পাঞ্জা), ট্রাক, বাঁশি, হাতঘড়ি, টেলিভিশন, বেঞ্চ, হাতপাখা, ডাব, বেলুন, হাতুড়ি, তবলা, মই, হারিকেন, তারা, মোটরগাড়ি (কার), হুক্কা, তরমুজ, মশাল, দাবাবোর্ড ও মাছ।

এ প্রতীকগুলো থেকেই ৪৯টি নিবন্ধিত দল পছন্দমতো প্রতীক কিংবা মার্কা সংগ্রহ করেছে। প্রতীকের তালিকায় নজর দিলে দেখা যায়, বাংলাদেশে নদী ও কৃষিভিত্তিক প্রতীকের পাশাপাশি ফল, ফুল, পশুপাখি, দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী সবই রয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১১টি নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও প্রতীকে নদী বা পানির ছোঁয়া এখনো বহাল আছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রতীক রেখেছে ‘নোঙ্গর’।

কৃষিভিত্তিক প্রতীক নিয়ে অন্যান্য দলও অবশ্য থেমে থাকেনি। রাজনৈতিক দলের পছন্দের তালিকায় কাস্তে, কোদাল, সোনালি আঁশ সবই আছে। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতীক কাস্তে, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির প্রতীক কোদাল। পাশাপাশি নতুন নিবন্ধিত দল তৃণমূল বিএনপির প্রতীক সোনালি আঁশ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রতিনিধিত্ব করেছিল মশাল মার্কা নিয়ে। মাঝে অনেক উত্থান-পতন এসেছে। কিন্তু মশাল মার্কা নিয়ে লড়াই এখনো চলছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের মার্কা কুলা। পাশাপাশি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মার্কা মই। হাতুড়ি নিয়ে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

ফলে-ফুলে ভরপুর প্রতীক : শুধু কৃষিই নয়, ফল-ফুল সবই ঠাঁই পেয়েছে প্রতীকের তালিকায়। ফলের রাজা আম থেকে জাতীয় ফল কাঁঠাল দুটিই দেখতে পাওয়া যায় নির্বাচনী দলের প্রতীকে। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক কাঁঠাল, আবার বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রতীক আম। আম, কাঁঠাল ছাড়াও ডাব প্রতীকেরও দেখা মিলল বাংলাদেশ কংগ্রেস দলে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close