নিজস্ব প্রতিবেদক
র্যাবের দাবি
বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৯ জনই শীর্ষ মাদক কারবারি
র্যাবের মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পর গত ১৫ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়জনকেই শীর্ষ মাদক কারবারি বলে দাবি করেছে বিশেষ এই বাহিনীটি। গত শনিবার রাতে র্যাব সদর দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৫ মে নারায়ণগঞ্জের র্যাব-১১-এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রিপন নিহত হয়। একই দিন কুষ্টিয়ায় র্যাব-১২-এর সঙ্গে নিহত হয় হামিদুল ইসলাম। ওই ঘটনার একদিন পর ১৭ মে র্যাব-৫-এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় রাজশাহীর আবুল হাসান ওরফে হাসান। একই ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ১৮ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান আবদুল আলিম। নিহতরা সবাই শীর্ষ মাদক কারবারি।
এ ছাড়া ১৮ মে চট্টগ্রামে র্যাব-৭-এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হাবিবুর রহমান প্রকাশ ওরফে মোটা হাবিব ও মো. মোশাররফ নামের দুজন নিহত হন। তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায় র্যাব। পরদিন ১৯ মে র্যাব-৬-এর সঙ্গে যশোরের অভয়নগরে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- আবুল কালাম, হাবিব শেখ ও মিলন কাশারী। এরাও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করে বাহিনীটি।
র্যাবের মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলাকালে ১৫ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে নয়জন নিহত হন। র্যাব নিহতদের সবাইকে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করলেও তাদের মধ্যে কয়েকজন মাদকসেবী বলে গুঞ্জন উঠে বিভিন্ন মহলে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত শনিবার দুপুরে এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের দুই দিনের সম্মেলনে সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক বিক্রেতা ও দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করা হচ্ছে। যারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে তাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়ে থাকে। যেমন র্যাবের সঙ্গে ঘটেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, এমন ঘটনায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে থাকেন। এগুলোর বিষয়ে তদন্ত চলছে। বিনাবিচারে কিছু হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো হত্যাকান্ড গোপন থাকবে না, সবগুলোরই বিচার হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর গত শনিবার রাতে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব দাবি করে, নিহত সবাই শীর্ষ মাদক চোরাকারবারি। র্যাব জানায়, গত ৪ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সারা দেশে র্যাবের হাতে ২ হাজার ২৮৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ২৯৯টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ হাজার ৯২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আর ৪৩০ জনকে ২৭ লাখ টাকার বেশি অর্থদন্ড করা হয়েছে। র্যাবের ৪৮৫টি অভিযানে প্রায় ২০ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে, গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার ভোর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে যশোর, ময়মনসিংহ, ফেনী ও দিনাজপুরে চার মাদক চোরাকারবারি মারা যান। আর বরিশালে ডাকাত ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ছিনতাইকারী নিহত হয়েছেন।
"