reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

রোজার মাসে ইফতারে শরবত, জিলাপি ও অন্য খাবার তৈরিতে চিনি লাগেই। বরং অন্য মাসের চেয়ে এ মাসে চিনি বেশি লাগে। তাই চিনির চাহিদা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। ফলে এ সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি করে দাম বাড়াতে দেখা যায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে অনেকটা বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। দেশে প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। তবে রোজা ও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ বছর রোজা ও গ্রীষ্মকাল একই সময়ে হওয়ায় চাহিদাও বেশি থাকবে। কয়েক বছর আগেও দেশীয় ১৫টি চিনিকল থেকে এক-দেড় লাখ টন চিনি পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় চিনিকলে উৎপাদন ২০-২৫ হাজার টনে নেমে এসেছে। এ কারণে প্রায় শতভাগ আমদানিনির্ভর হলেও ডলারের উচ্চমূল্য, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে চিনির বাজারে অস্থিরতা কমছে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এনবিআর চিনি আমদানির শুল্ক কমিয়েছে খুবই কম। তাছাড়া দেশীয় মিলগুলো থেকে পর্যাপ্ত চিনি পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। রোজা ও গরমকালের জন্য বাড়তি চাহিদার চিনি না থাকায় দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়বে। শুল্ক কমানোর ঘোষণা আসার পর দাম না কমে উল্টো বেড়েই চলেছে চিনির পাইকারি বাজারে। বিশ্ববাজারে চিনির দাম কয়েকদিন ধরেই বাড়ছিল। তবে চিনির শীর্ষ উৎপাদক ব্রাজিলে উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা গেছে। ফলে বিশ্ববাজারে সরবরাহ নিয়েও উদ্বেগ কমেছে। তাই এ ভোগ্যপণ্যের দরপতন ঘটেছে। গত বুধবার বিজনেস রেকর্ডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপরিশোধিত চিনির সরবরাহ মূল্য হ্রাস পেয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি পাউন্ডের দাম স্থির হয়েছে ২২ দশমিক ৯৮ সেন্টে। সাদা চিনির দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। প্রতি টনের মূল্য নিষ্পত্তি হয়েছে ৬৫৮ ডলারে। তবে বিশ্ববাজারের এ পরিস্থিতি হলেও দেশে আসন্ন রোজা ও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বাড়ছে দাম। পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর ও চালের মূল্য সংযোজন কর এবং আমদানি শুল্ক কমিয়ে ক্রেতাদের বোঝা কমানোর উদ্যোগ নেয়। তবে বাজারে এসব উদ্যোগের প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। চিনির দাম কমাতে তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফায় কমানো হয়েছে আমদানি শুল্ক। এরপরও কমেনি দাম। আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, আসন্ন রোজা ও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বাড়ছে দাম। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী রোজার প্রধান চার পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেওয়া সত্ত্বেও এনবিআর লোক দেখানোর মতো করে শুল্ক কমিয়েছে। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, এনবিআর রেগুলেটরি ট্যাক্স (নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক) কমিয়ে বাজারমূল্য কমানোর উদ্যোগ নেবে। কিন্তু কাস্টমস ডিউটি সীমিত আকারে কমিয়ে চিনির ক্রমবর্ধমান দাম কমানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা। সরকারের উচিত দেশীয় মিলের উৎপাদন বৃদ্ধি কিংবা আমদানি বাড়িয়ে ডিলার পর্যায়ে চিনি সরবরাহ বাড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে চিনির দাম কমানো যাবে না। রমজানে চিনির দাম সাধারণের নাগালের মধ্যে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, আমাদের সেটাই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close