মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি

  ০৭ মে, ২০২৪

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি

পাহাড়ে শখের বাগান

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী ইউনিয়নে ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিতে বিষমুক্ত মিশ্র ফলের বাগান করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন নারী উদ্যোক্তা তানিয়া আশরাফ ইসলাম। উপজেলার তিনটহরী এলাকার বাসিন্দা উচ্চশিক্ষিত এই সাহসী নারী নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ফলদ বাগান। তার বাগানে রয়েছে বিদেশি ফল ড্রাগন, কিউজাই, ব্যানানা, সূর্যডিম, এবোকোডা, নানা জাতের আম, লিচু, মাল্টা, কমলা, রামবুটান ও আতাফল গাছ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের দিকে উপজেলার তিনটহরী বড়টিলা এলাকায় প্রায় ৩ একর ভূমিতে গড়ে তোলেন বিদেশি ড্রাগন ফলের বাগান। প্রথমে প্রায় ৪ হাজার চারা রোপণ করেন। এছাড়া উপজেলার কুমারী এলাকায় প্রায় ১৩ একর পাহাড়ি ভূমিতে আরো ৮ হাজার ড্রাগন চারা লাগান। সেই সঙ্গে বিদেশি ফল কিউজাই, ব্যানানা, সূর্যডিম রোপণ করেন তিনি। ইট-পাথরের নগরীতে বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্থ না হয়ে পাহাড়ের টানে তিনি ছুটে যান সেখানে। ১৬ একক পাহাড়ি ভূমিতে তিলে তিলে গড়ে তোলেন মিশ্র ফলদ বাগান। সেখানে বাগানকেন্দ্রিক একটি রিসোর্ট করার স্বপ্ন দেখতেন। এরই মধ্যে তার সেই স্বপ্ন সফলতার দ্বারপ্রান্তে। তার বাগানকে বহুমুখী বাণিজ্যিক ফলদ বাগানে রূপান্তর করতে চান তিনি। এর পাশাপাশি ‘হিল টপ গ্রোভস অ্যান্ড ইকো-রিসোর্ট লিমিটেড’ নামের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনায় এগিয়ে চলেছেন এই নারী উদ্যোক্তা। মিশ্র ফলদ বাগান করে তিনি চমকে দিয়েছেন অন্য নারীদের। শ্রমিকদের সঙ্গে বাগান পরিচর্যার কাজে সময় দিচ্ছেন তিনি। কখনো গাছে পানি দিচ্ছেন, কখনো আগাছা পরিষ্কার করছেন। নিজের শখ আর স্বপ্ন পূরণে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।

তানিয়া বলেন, ইট-পাথরের জীবনের চেয়ে পাহাড়ের প্রকৃতি তার ছোটবেলা থেকেই পছন্দ। তাই তো একসময়ে পাহাড়ে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি মিশ্র ফলদ বাগান করার ইচ্ছে পোষণ করেন। সেই বাগানে একটি নান্দনিক রিসোর্ট তৈরির ইচ্ছেও ছিল। তিনি বলেন, এমন রিসোর্ট করা হবে যেখানে পর্যটকরা চাইলে রাতেও থাকতে পারবেন। মাত্র ৩ একর পাহাড়ি ভূমি নিয়ে শুরু করা মিশ্র ফলদ বাগান এখন প্রায় ১৬ একরে পরিণত হয়েছে। বাগানের উৎপাদিত বিষমুক্ত ফল সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান তিনি। বর্তমানে তার বাগানে আশপাশের এলাকার প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ কাজ করছেন।

তিনি বলেন, মিশ্র ফল বাগানের রিসোর্টে থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। এটি হবে দেশের প্রথম কোনো ফলদ বাগানে রিসোর্টের আনন্দ উপভোগ করার মতো দর্শনীয় স্থান। এই বাগান করতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আজ তিনি সাফল্যের সঙ্গে দুটি বাগান গড়ে তুলেছেন। এজন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান। মিশ্র ফলদ বাগান তৈরিতে তাকে সবধরনের সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১২ হেক্টর বাগানে প্রায় ১০০ টন ড্রাগন ফল উৎপাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অঙ্কার বিশ্বাস বলেন, উপজেলার পাহাড়ি জনপদে দেশি-বিদেশি মিশ্র ফলদ বাগানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি উদ্যোক্তাদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close