এমএ রউফ, সিলেট
সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭৩৮ মামলা
চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি
ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ সিলেট বিভাগের ৭৩৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ আদালতে বিচারকের পদ শূন্য থাকায় গত চার মাসে একটি মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি। গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে ৭৩৮ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ আদালতে বিচার পেতে আসা মানুষ বিভিন্নভাবে হয়রানি হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাই সিলেটে শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন সিলেটবাসী। তিন বছর ধরে চট্টগ্রামের এ আদালতে রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকায় একটি সরকারি বাড়িতে দুটি শ্রম আদালতের কার্যক্রম চলে। প্রথম আদালতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৩৯টি এবং দ্বিতীয় আদালতে একই সময়ে নিষ্পত্তি হয় ১২৯টি মামলা। চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক (চেয়ারম্যান) মফিজুল ইসলাম ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর অবসরে যান। সেদিন থেকে বিচারক শূন্য রয়েছে আদলতটি। যে কারণে প্রথম শ্রম আদালতের বিচারক (চেয়ারম্যান) মুক্তার আহমদ একসঙ্গে দুটি আদালতের দায়িত্ব পালন করতেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তিনিও অবসরে যান। আইনজীবীরা জানান, শ্রম আদালতে মামলা করার ৬০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা ছোটলেখা বাগানের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১৮ মে চাকরিতে পুনর্বহাল চেয়ে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় শ্রম আদালতে মামলা করেন বাগানটির শ্রমিক খলিল মিয়া। এরপর ছয় বছর ১১ মাস কেটে গেছে, কিন্তু মামলার কোনো সুরাহা হয়নি। বাদী খলিল মিয়া জানান, এ পর্যন্ত ৫৭ বার মামলার তারিখ পড়েছে। বিচারক না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে শুনানি হয়নি। ছোটলেখা চা বাগানের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন আইনজীবী আশীষ কুমার দত্ত। তিনি জানান, শ্রম আদালত বছরের বেশিরভাগ সময় বিচারক শূন্য থাকে। এ কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে অনেক সময় লাগছে।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম শামিউল আলম জানান, সিলেটে শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিনের দাবি সিলেটবাসীর। কারণ সিলেটে অনেক চা বাগান, হোটেল শ্রমিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে অনেক শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। বিচার পেতে তাদের চট্টগ্রামে যেতে হয়। এতে যাতায়াতসহ বিচার পেতে নানাভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সিলেটে শ্রম আদালত হলে শ্রমিকদের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। সিলেটের ৭৩৮ মামলা চট্টগ্রাম শ্রম আদালতে বিচারাধীন আছে।
"