উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফ্লোরিডার লডারহিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ ওভারে বাংলাদেশ করেছে ১৮৪ রান। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ। ২০১২ সালে মিরপুরে ১৭৯ ছিল আগের সেরা।
বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে শুরু ম্যাচের প্রথম বলেই স্যামুয়েল বদ্রিকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেছিলেন লিটন। পরের ওভারে বোলিংয়ে অ্যাশলি নার্স। আগের দুই ম্যাচে শুরুতে দুটি করে উইকেট নেওয়া স্পিনারকে এবার লিটন মারেন টানা দুটি ছক্কা। পরের বলে বাউন্ডারি।
তামিম কেন থাকবেন দর্শক হয়ে! তৃতীয় ওভারে উৎসবে সামিল তিনিও। বদ্রিকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারির পর স্লগ সুইপে ওড়ান ছক্কায়। স্পিনের তিন ওভারে তুলোধুনো হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ হাত বাড়াল পেসে। ফুটন্ত কড়াই থেকে গিয়ে পড়ল যেন জ্বলন্ত উনুনে।
আন্দ্রে রাসেলের প্রথম দুই বলেই লিটনের চার ও ছক্কা। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিনি ওপাশে যাওয়ার পর ওভারের শেষ তিন বলে তামিমের দুই বাউন্ডারি। ৩.৪ ওভারে দল স্পর্শ করে পঞ্চাশ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্রততম দলীয় ফিফটি।
জুটির পতন শেষ পর্যন্ত রানের নেশাতেই। পঞ্চম ওভারে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে স্কুপ করতে গিয়ে তামিম ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে। ফেরেন ১৩ বলে ২১ রান করে। থামে ২৮ বলে ৬১ রানের জুটি। ৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ৬৬। এমন দুর্দান্ত ভিত্তি পেয়েও সৌম্য সরকার পারেননি ছন্দে ফিরতে। তিনে নেমে আগের দিনের মতোই আউট হয়েছেন স্লোয়ার বল উড়িয়ে মেরে (৫)।
লিটন ফিফটি স্পর্শ করেন ২৪ বলে। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে ফিফটির পর টি-টোয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। অবিশ্বাস্যভাবে, রঙিন পোশাকে দেশের হয়ে এটি লিটনের প্রথম ফিফটি! আগের ১৪ টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছিল ৪৩ রান; ১২ ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৩৬।
তবে জোড়া উইকেটের পতন রানের জোয়ারে আসে ভাটার টান। গতি ফেরানোর চেষ্টায় উইকেট হারাতে হয় আরও। ১৪ বলে ১২ রান করে মুশফিকুর রহিম ফেরেন শরীর সোজা বল গ্লাইড করতে গিয়ে। পরের ওভারে শেষ হয় লিটনের পথচলাও। ৩২ বলে ৬১ রানের ইনিংসের দুই ভাগ যেন বাংলাদেশ ইনিংসের গতিপথের প্রতিচ্ছবি। প্রথম ১৬ বলে করেছিলেন ৪৫ রান, পরের ১৬ বলে ১৭!
সাকিব-মাহমুদউল্লাহর কাজটা এরপর ছিল কঠিন। উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়াতে হতো রানের গতি। সাকিব পারেননি আগের দিনের মতো ঝড় তুলতে (২২ বলে ২৪)। ১০ ওভারে রান ছিল ৯৭। পরের ৫ ওভারে আসে ৪০। ১৬.৩ ওভার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে আধ ঘণ্টা। শেষের ব্যাটসম্যানদের কাজটা হয়ে ওঠে আরও কঠিন। মাহমুদউল্লাহ তারপরও খেলেছেন আরও একটি কার্যকর ইনিংস। আরিফুল হক যদিও পারেননি প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে। ২০ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। ১৬ বলে ১৮ রানে অপরাজিত আরিফুল।
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৮৪/৫ (লিটন ৬১, তামিম ২১, সৌম্য ৫, মুশফিক ১২, সাকিব ২৪, মাহমুদউল্লাহ ৩২*, আরিফুল ১৮*; বদ্রি ০/২৩, নার্স ০/৩১, রাসেল ০/৩৬, ব্র্যাথওয়েট ২/৩২, পল ২/২৬, উইলিয়ামস ১/৩২)।
পিডিএসও/হেলাল