reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ মার্চ, ২০২৪

রোজায় যে কাজগুলো পালন করা সুন্নাত

রমজান মাসের পুরোটা সময় ফজিলত ও বরকতপূর্ণ। এ মাসের রোজার অন্যতম ফজিলত হলো আল্লাহ তায়ালা নিজেই এর প্রতিদান দেবেন।

পবিত্র রমজান মাস আল্লাহ তাআলার মহান দান। সওয়াব ও পুণ্য লাভের অতুলনীয় মাস। মার্জনা ও মুক্তিপ্রাপ্তির সুবর্ণ সময়। রমজান মাস মানুষকে মহান হতে শেখায়, ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার প্রিয়ভাজন হতে, জান্নাত প্রাপ্তির নিশ্চয়তা অর্জন করতে শেখায়।

নবী করিম (সা.) পবিত্র রমজানে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর দরবারে সমর্পণ করে দিতেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তনু-মন উজাড় করে দিতেন। খাঁটি গোলাম হিসেবে ইবাদতের মাঝে নিজেকে মগ্ন রাখতেন।

রমজানের ফরজ ইবাদত রোজার পূর্ণতার জন্য বেশকিছু সুন্নত আমল রোজাদারের জন্য জরুরি। এখানে এমন কিছু সুন্নত আমলের বিবরণ তুলে ধরা হলো—

উত্তম আচরণ

রোজা রেখে অন্যের সঙ্গে ভালো ও উত্তম আচরণ করা উচিত। রোজাদারের পক্ষ থেকে কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ কখনো কাম্য নয়। উল্টো যদি কেউ রোজাদারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বা গালি দেয় কিংবা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে আসে তাহলে রোজাদাররা তার দুর্ব্যবহারের প্রতি-জবাবে ভাল ব্যবহার করবেন এবং বলবেন। ‘আমি রোজাদার’।

এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সিয়াম হচ্ছে ঢালস্বরূপ। অতএব, কেউ যেন মন্দ কথা না বলে, মূর্খ আচরণ না করে। যদি কোনো লোক তার সঙ্গে ঝগড়া করে কিংবা তাকে গালি দেয় তাহলে সে যেন বলে দেয়, আমি রোজাদার, আমি রোজাদার। (বুখারি, মুসলিম)

সেহরি খাওয়া

রোজাদারের জন্য সেহরি খাওয়া সুন্নত। হজরত আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সেহরি খাও; কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি, হাদিস, ১৯২৩ মুসলিম, হাদিস, ১০৯৫)

বিলম্বে সেহরি খাওয়া

বিলম্বে সেহরি খাওয়া সুন্নত। হজরত আনাস রা. যায়েদ বিন সাবেত রা. থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সেহরি খেলাম। এরপর তিনি নামাজে দাঁড়ালেন। আমি বললাম, আযান ও সেহরির মাঝে কতটুকু সময় ছিল? তিনি বলেন, পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত করার সমান সময়। (বুখারি, হাদিস, ৯২১)

তাড়াতাড়ি ইফতার করা

সময় হয়ে যাওয়ার পর দ্রুত ইফতার করা সুন্নত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষ ততদিন পর্যন্ত কল্যাণে থাকবে, যতদিন তারা অবিলম্বে ইফতার করে। (বুখারি, হাদিস, ১৯৫৭, মুসলিম, হাদিস, ১০৯৮)

কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। যদি কাঁচা খেজুর না পাওয়া যায় তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকে তাহলে পানি দিয়ে।

হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ পড়ার আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ২৩৫৬, সুনানে তিরমিজি, হাদিস, ৬৯৬)

ইফতারের দোয়া পড়া

ইফতার শুরুর আগে হাদিসে বর্ণিত ইফতারের দোয়া পড়া সুন্নত। ইফতারের সময় এ দোয়াটি পড়া যেতে পারে—

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিজের মাধ্যমে ইফতার করেছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close