হাসপাতালে স্বাস্থ্যের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম জিয়া এখন কিছুটা সুস্থ আছেন। তবে লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন।

দীর্ঘ পাঁচ মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি বাসায় ফেরেন বেগম খালেদা জিয়া। এক মাস পর চিকিৎসকদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বিএনপি চেয়ারপারসন।

হাসপাতালে তার স্বাস্থ্যের বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে বাসায় ফেরার পরামর্শ দেন। পরে রাত ১২টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান তিনি।

বেগম জিয়া বাসার পৌঁছানোর পর তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, এটি তার রুটিন মেডিকেল টেস্ট। বেগম খালেদা জিয়া এখন কিছুটা সুস্থ আছেন।

এই সুস্থতা ক্ষণিকের তাই বেগম জিয়াকে অনতিবিলম্বে বিদেশে নিয়ে লিভার ট্রান্সপ্লান্টসহ চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানান এই চিকিৎসক।

৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভার সিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। এরইমধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্‌যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিতের মাধ্যমে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান তিনি।

দণ্ড স্থগিত করে সপ্তমবার বর্ধিত মুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর। এর আগেই তার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অষ্টমবারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়। মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শর্ত দুটি হলো: খালেদা জিয়া আগের মতোই ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।