নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ জুন, ২০১৯

রাজনীতির গতি-প্রকৃতি জানতে চায় তরুণরা

দেশের আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি কোন পথে যাচ্ছে এবং কীভাবে একটি সুখি সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়া যায় সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে দেশের তরুণরা। গতকাল রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগের প্রচার সেল আয়োজিত ‘তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক প্রশ্নোত্তর ও মতবিনিময় সভায় এসব প্রসঙ্গ জানতে চেয়েছে তরুণরা। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মেরিনা জাহান সভায় উপস্থিত তরুণদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম বলেন, তারুণ্য সব সময় শারীরিক বিষয় নয়, এটি হলো মানসিক বিষয়। তরুণদের ভাবনা আমাদের জানা খুবই প্রয়োজন। কারণ জাতির অগ্রযাত্রায় তরুণদের ভূমিকাই ব্যাপক।

এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মত প্রকাশের দুয়ার অবারিত। আগে মানুষ কোনো কিছু জানার জন্য পত্রিকা-টিভির শরণাপন্ন হতো। এখন ফেসবুক ও সামাজিক মাধ্যমে জানতে পারছে। আগে ৪০-৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করত। এখন দেশে ৯ কোটি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তবে একজনের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অন্যজনের অধিকারের হস্তক্ষেপ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। মাদকের বিষয়ে এক প্রশ্নোত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। দলের মধ্যে যদি কোনো নেতা মাদকে জড়িত থাকেন তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নারী ক্ষমতায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীদের উন্নয়নে দুটি বিষয় রয়েছে। একটি হলো নারী ক্ষমতায়ন ও অপরটি নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি। নারীর ক্ষমতায়নে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। যেমন—স্বামী পরিত্যক্তা নারীর ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি।

এ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবসহ যেকোনো তথ্য নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা সরকার আগামী সেপ্টেম্বরেই অর্জন করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা অর্জন করলেও ফেসবুক-ইউটিউবে সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা এত দিন আসেনি, যা একটি সমস্যা ছিল সরকারের জন্য। তবে সেপ্টেম্বর মাস অতিক্রম করার পরে আমরা এই ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা অর্জন করব। অর্থাৎ কেউ ইচ্ছা করলেই যা খুশি তাই সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যবহার করতে পারবে না, প্রচার করতে পারবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি বঙ্গবন্ধু খুনিদের মধ্যে ৬ জনের রায় কার্যকর করা যায়নি। একজন বিদেশে থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করেছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে দুজনের অবস্থান আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এর বাইরে ৩ জনের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যাদের অবস্থান নিশ্চিত করা গেছে তাদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসি রায় কার্যকর করা না গেলে নিজেকে ব্যর্থ মনে করব।

আগামী দিনের ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে এক তরুণের প্রশ্নের জবাবে সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। অনেক আন্দোলন করেছি। তখন ছাত্র রাজনীতির উদ্দেশ্য ছিল দেশ এবং সমাজের সুশাসন প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে, এজন্য অবশ্যই গুণগত পরিবর্তন করতে হবে। এর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ যোগ করে বলেন, রাজনীতি হলো একটি ব্রত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সামাজিক অবক্ষয়ের প্রভাব রয়েছে ছাত্র রাজনীতিতেও। এই অবক্ষয়ের প্রভাব এড়াতে একজন ছাত্রকে পড়াশোনা করে রাজনীতিতে আসতে হবে। আর পরিবারের ঊর্ধ্বে এসে রাষ্ট্রকে পরিবার ভাবতে পারলে প্রকৃত রাজনৈতিক নেতা তৈরি হবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজনীতি,গতি-প্রকৃতি,তরুণ,আওয়ামী লীগ,ভাবনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close