নিজস্ব প্রতিবেদক
সুযোগ সন্ধানী ঠেকাতে বাড়তি বাছাই ছাত্রলীগে
চলতি সপ্তাহেও হচ্ছে না নতুন কমিটি ঘোষণা | শীর্ষপদ প্রত্যাশী ৩২৩ জন ডাক পাচ্ছেন গণভবনে
সুযোগসন্ধানী কেউ যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশি করে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা। গণভবনে পদপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলার পর নতুন শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই লক্ষ্যে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ৩২৩ জনকে আগামীকাল রোববার ও পরের দিন গণভবনে ডাকা হতে পারে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগে পদ প্রত্যাশীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নেতা হিসাবে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আগে তাদের রাজনৈতিক দুরদর্শিতা, সাংগঠনিক দক্ষতা, সংগঠনের প্রতি ত্যাগ, যোগ্যতা ও প্রতিজ্ঞা পরখ করে দেখবেন শেখ হাসিনা।
সূত্র আরো জানিয়েছে, ছাত্রলীগের নেতা হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কমিটি ঘোষণা করা হবে। ফলে চলতি সপ্তাহেও হচ্ছে না ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা।
এ মাসের ১১ ও ১২ তারিখে ছাত্রলীগের ২৯ তম সম্মেলন হয়। কমিটি ঘোষণা ছাড়াই শেষ হয় সম্মেলন। সম্মেলনে সভাপতি পদে ১১১ ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্যে ২১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। চলতি মাসের ১১ ও ১২ তারিখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে নতুন নেতা নির্বাচন করা ছাড়াই শেষ হয় সম্মেলন।
এর আগে তিন দফা ভোটের মাধ্যমে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচিত হয়। সারা দেশ থেকে আসা কাউন্সিলররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তবে গত দুইবার ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হলেও তাদের নিয়ে নানা সমালোচনা হয়। সর্বশেষ দুইবারের কমিটিতে সংগঠনটিতে অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনের বিরুদ্ধে এসব নানা অভিযোগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমলে নিয়েছেন। পরিপ্রক্ষিতে সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট প্রক্রিয়া বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা।
এবারের সম্মেলনে তিনি জানান যে, ছাত্রলীগে তার পছন্দের নেতৃত্ব আছে। তবে কারা তার পছন্দের প্রকাশ করেননি। শেখ হাসিনা অন্যদের মত জানতে চেয়েছেন। সবাই একবাক্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর পছন্দেই তাদের পছন্দ। তাই জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ছাত্রলীগ কমিটি নিজের মতো করে বেছে নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি সময়ের দাবিতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের ছয় দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগ হারিয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য।
বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ সংগঠনে প্রভাব বেড়েছে কয়েকটি সিন্ডিকেটের। দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডসহ নানা বির্তকে জড়িয়েছে সংগঠনের অনেক নেতা, যা ছাত্রলীগকে করেছে বিতর্কিত। সিন্ডিকেট বিতর্ক চলমান থাকা অবস্থাতেই সর্বশেষ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনে চূড়ান্ত করা যায়নি শীর্ষ নেতৃত্ব। বর্তমান ছাত্রলীগের নেতারা আশা করছেন, দুঃসময়ে যারা ছাত্রলীগকে ধারণ করেছে তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব বাছাই করা হোক।
পিডিএসও/তাজ