পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতা, আন্তরিকতা, মানবতা বোধের কারণেই পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্যাতিত, ক্ষুধার্ত ও পশ্চাদপদ মানুষকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সাথে সম্পৃক্ত করার জন্যই পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য মেলার মাধ্যমে দেশের সব মানুষের মাঝে আমাদের পার্বত্য মানুষের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তুলে ধরা। পাশাপাশি আমাদের আহার, আচার ব্যবহার সবকিছু তুলে ধরাই হলো মেলার মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমরা চাই, সব জাতি-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মাঝে ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হোক।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত পার্বত্য মেলা-২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বক্তব্য দেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, সাবেক মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম এনডিসি, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এনডিসি, যুগ্মসচিব মো. হুজুর আলী ও যুগ্মসচিব সজল কান্তি বনিক উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, যোগ্য নেতৃত্ব আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে চলমান পাহাড়ি-বাঙালি ভ্রাতৃঘাতী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ফসল হিসেবে গত ২৬ বছরে বৃহত্তর পার্বত্য অঞ্চলের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।

এর আগে প্রধান অতিথি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ফিতা কেটে, পায়রা ও বেলুন ওড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। তিনি পরে অতিথিদের নিয়ে মেলার স্টল ঘুরে দেখেন এবং স্টলের কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি চার দিনব্যাপী পার্বত্য মেলা চলবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পার্বত্য তিন জেলার ২৭৫ জন শিল্পীর ঐতিহ্যবাহী পরিবেশনায় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে। এ পার্বত্য মেলায় ৯৭টি স্টল বরাদ্দ রয়েছে। মেলার স্টলে তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যসামগ্রী, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবার প্রদর্শন ও বিক্রয় চলছে।