নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

ঋণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করুন : প্রধানমন্ত্রী

চার্লস মিশেলের অভিনন্দন, একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

ছবি : পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, কোনো উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে—কোনটা আগে প্রয়োজন। অনেক সময় প্রকল্প পরিচালনার জন্য আমরা এডিবি বা বিশ্বব্যাংক বা অন্য সংস্থা বা দেশ থেকে ঋণ নিয়ে কাজ করি। আমরা কী পরিমাণ ঋণ নিচ্ছি এবং সুদসহ কী পরিমাণ পরিশোধ করতে হবে এবং সেটা করার মতো সক্ষমতা আছে কি না—এসব যাচাই করা একান্তভাবে দরকার।

বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের সভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুুস সালাম।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন—আমি যখন-তখন যেকোনো প্রকল্প গ্রহণ করি না। আগে চিন্তা করে দেখি—কোনটা দেশের কাজে লাগবে আর কোনটা লাগবে না। এর থেকে মানুষ কতটুকু পাবে। অযথা টাকা ধার করা নয়; কারণ, যা সুদসহ আমাকেই পরিশোধ করতে হয়। তাই এই বোঝা যাতে আমাদের কাঁধে না পড়ে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। পাশাপাশি যে প্রকল্প আমরা নেব, সেটা আমরা ওই কাজের বা ওই এলাকার জন্য কার্যকর কি না এবং এর থেকে সাধারণ মানুষ কী পরিমাণ লাভবান হবে, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এছাড়া অর্থনীতিতেও কেমন গতি সঞ্চার হবে, তাও দেখতে হবে।

আবদুুস সালাম বলেন, বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্পগুলো দুমাস অন্তর অন্তর পর্যালোচনা করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প পরিচালকদের দক্ষতা বাড়ানোর তাগিদও দিয়েছেন।

ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে। এটা শক্তিশালী করতে হবে। সময় ও খরচ যাতে না বাড়ে, এটা দেখতে হবে। পিডিদের (প্রকল্প পরিচালকদের) দক্ষতা কম, ফলে প্রকল্পের সময় বাড়ে। আমরা পিডিদের দক্ষতা বাড়াতে একটা বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি করব। প্রকল্প পরিচালক যত দক্ষ হবেন, ততই প্রকল্প বাস্তবায়ন বাড়বে। প্রকল্পে বিলম্ব করা যাবে না, যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা হবে। জিওবি খরচ বেশি করব, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে, সেসব বিভাগে কী ধরনের প্রকল্প নিতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আবদুুস সালাম বলেন, বিদেশিরা প্রকল্প দিচ্ছে তাদের স্বার্থে। পেমেন্ট না দিলে প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলে মুখে আঙুল দিয়ে বসে থাকবে না সরকার।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের (ইসি) প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। অভিনন্দন বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্প্রতি আপনি পুনর্নিয়োগ পাওয়ায় আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের একটি নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার। আমরা টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং অন্য সব অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সহযোগিতাকে বিস্তৃত এবং আধুনিকীকরণের উদ্দেশে একটি অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আলোচনা শিগগির শুরু হবে। এ চুক্তি আগামী বছরগুলোয় আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি শক্ত কাঠামো তৈরি করবে।’

মিশেল আরো লেখেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের কাঠামোর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের অংশীদারত্বকে সমুন্নত রাখতে এবং অগ্রসর করতে এ সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সাফল্য কামনা করে তিনি চিঠি শেষ করেছেন এ বলে, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, দয়া করে আমার সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস গ্রহণ করুন।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রধানমন্ত্রী,ঋণ,শেখ হাসিনা,প্রকল্প
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close