reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু ন্যাটোর

ছবি : সংগৃহীত

পশ্চিমা রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের মুখে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধের সুর শোনা যাচ্ছে। তারা বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করবে ন্যাটো। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা।

স্কাই নিউজের প্রতিবেদন মতে, শনিবার (২০ জানুয়ারি) ন্যাটোর সামরিক কমিটির সভাপতি ও ডাচ নৌবাহিনীর এডমিরাল রব বোয়ার বলেছেন, এমনটা নয় যে আমরা শান্তিতে রয়েছি। এমন অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে সংঘাতের জন্য জোট প্রস্তুতি শুরু করেছে। জোটের সদস্য দেশের বেসামরিক নাগরকিদেরও সেটাই করা উচিৎ।

প্রায় দুই বছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র দেশটিকে অর্থ ও যুদ্ধ রসদ দিয়ে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে ন্যাটো। কিন্তু বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়েও রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পেরে উঠছে না ইউক্রেন। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে আরও বেশি হুমকি মনে করছেন ন্যাটোর কর্মকর্তারা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। জার্মান সংবাদমাধ্যম দার স্পিজেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা মনে করছেন, পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে এমন হামলা হতে পারে।

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা প্রায় প্রতিদিনই ক্রেমলিনের কাছ থেকে হুমকি শুনছি। তাই আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে যে, (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) ভ্লাদিমির পুতিন এক দিন যেকোনো সময় ন্যাটোর সদস্য দেশ আক্রমণ করতে পারেন।’

স্নায়ুযুদ্ধের পর ৯০ হাজার সেনা নিয়ে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করতে চলেছে ন্যাটো। আগামী সপ্তাহেই শুরু হবে এই মহড়া। চলবে কয়েক মাস ধরে। প্রায় ৯০ হাজার সেনা অংশ নেবে এ মহড়ায়। ন্যাটোর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল ক্রিস ক্যাভোলি এ মহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত রাশিয়াকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা নিয়ে কয়েক দশক ধরে এসব পরিকল্পনা সাজিয়েছে জোটটি।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে জাতীয় প্রতিরক্ষা প্রধানদের সঙ্গে দুই দিনের বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাভোলি বলেন, ‘স্টিডফাস্ট ডিফেন্ডার ২০২৪’ নামের এ মহড়ার মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক পরিকল্পনাগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, তার অনুশীলন করবে ন্যাটো।

বৃহস্পতিবারের ঘোষণায় ন্যাটোর এই কমান্ডার সরাসরি রাশিয়ার নাম উল্লেখ করেননি। তবে জোটের কৌশলগত নথিতে রাশিয়াকে সদস্যদেশগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রত্যক্ষ হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ন্যাটোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ মহড়ায় ৫০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ, ৮০টির বেশি যুদ্ধবিমান থাকবে। এ ছাড়া ১৩৩টি ট্যাংকসহ অন্তত ১ হাজার ১০০টি যুদ্ধযান থাকবে। সামরিক জোটটি আরও বলেছে, এ মহড়ার মধ্যদিয়ে ইউরোপের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে জোরদার করতে উত্তর আমেরিকা ও জোটের অন্যান্য অংশ থেকে দ্রুত বাহিনী মোতায়েনের সক্ষমতা পরীক্ষা করবে ন্যাটো।

স্টিডফাস্ট ডিফেন্ডার মহড়ার দ্বিতীয় পর্বে ন্যাটো পোল্যান্ডে বিশেষ বাহিনী (কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স) মোতায়েনের বিষয়কে গুরুত্ব দেবে। রাশিয়া থেকে হামলা হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতেও মহড়া হবে। জার্মানিও হবে মহড়ার একটি স্থান। মে মাসের শেষ পর্যন্ত এ মহড়া চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মহড়ায় ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর সেনাদের পাশাপাশি সুইডেনের সেনারাও অংশ নেবে। শিগগিরই ন্যাটোতে যোগদানের আশা করছে সুইডেন। ন্যাটোর তথ্যানুসারে, এর আগে এ ধরনের বড় আকারের মহড়া হয়েছিল ১৯৮৮ সালে, স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে। তখন ১ লাখ ২৫ হাজার সেনা মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। আর ২০১৮ সালের এক মহড়ায় অংশ নিয়েছিল ৫০ হাজার সেনা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ন্যাটো,যুদ্ধের প্রস্তুতি,রাশিয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close