নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পোশাকের ন্যায্যমূল্য চেয়েছে বিজিএমইএ

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকপণ্যের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় উদ্যোগী হতে দেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার প্রেক্ষাপটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, বার্নিকাট এখন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেই ফিরে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকপণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা ফের চেয়েও এখনো পায়নি বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিতে যেসব শর্ত দিয়েছিল, তার সব কটিই পূরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে বার্নিকাটের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার প্রতি এ আহ্বান জানান পোশাক রফতানিকারক সমিতির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বার্নিকাট এখন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেই ফিরে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকপণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা ফের চেয়েও এখনো পায়নি বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিতে যেসব শর্ত দিয়েছিল, তার সব কটিই পূরণ করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশের জন্য এ সুবিধা যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তা আপনার (বার্নিকাট) মাধ্যমে মার্কিন সরকারকে অনুরোধ করছি। যুক্তরাষ্ট্রের তুলা দিয়ে যে বস্ত্র হয়, তা দিয়ে তৈরি বাংলাদেশের পোশাক যেন শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পায়, সে জন্য সুপারিশ করতে বার্নিকাটকে অনুরোধ করেন তিনি।

পোশাকশিল্পের অগ্রগতি তুলে ধরে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত চার বছরে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতে কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা আপনি নিজ চোখে দেখেছেন। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প এখন সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বচ্ছ শিল্প খাত। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে এখনো এ শিল্প নিয়ে কিছু ভুল ধারণা থেকে গেছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে এ দেশের শিল্প পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবেন বলে আশা রাখছি।

তিনি বলেন, গত আট বছরে তিন ধাপে তিনটি মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি মোট ৩৮১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অথচ বিগত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা যেন পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে সেদিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মার্শা বার্নিকাট বাংলাদেশ ও দেশের পোশাক খাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। ২০১৪ সালের শেষার্ধে তিনি এমন সময় এসেছিলেন, যখন রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর এ শিল্প হুমকির মুখে পড়ে। পোশাকশিল্পের সেই টিকে থাকার সংগ্রামের সময়ে তিনি শিল্পের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। তিনি পোশাকশিল্পে আমাদের পরমজন, পরম আত্মীয়।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কারখানা সংস্কারের পর সবচেয়ে বড় বাধা শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা। সম্প্রতি বছরগুলোয় এ বিষয়ে কাজের অগ্রগতি শ্লথ হয়ে গেছে। আমি যে কথাটা জোর দিয়ে বলছি, আন্তর্জাতিক শ্রম আইনগুলো মেনে চলা। এটা শুধু সঠিক কাজই নয়, বুদ্ধিমানের কাজও বটে। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে আইনগত পরিবর্তন আনুন। না হলে বিদেশি ক্রেতাদের অন্যত্র ঝুঁকে পড়ার হুমকিও বাড়বে। শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পাশাপাশি কার্যকর করলে বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা বাড়বে। এটি বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের অংশ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করতেও সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সাল থেকে অ্যাকর্ড এলায়েন্সের মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাতগুলোয় বিশাল পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে। এখন বিশ্ব নিরাপদ কারখানাগুলোর মধ্য চলে এসেছে বাংলাদেশ। যেটা আমি স্বচোখে দেখলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close