তারুণ্য ডেস্ক
দাসত্ব নয়, উদ্যোক্তা হোন
চাকরি মানেই আমাদের কাছে নিরপত্তার এক বটবৃক্ষ। মাস গেলেই নির্দিষ্ট অংকের বেতন। বছর ঘুরতেই প্রমোশন আর ইনক্রিমেন্ট। সেই সঙ্গে ৯টা-৫টা অফিস। বেশ তো কেটে যাচ্ছে। আর সরকারি চাকরি মানে নিরাপত্তার বিশাল বটগাছ। যার ছায়াতলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা। আর তাই লেখাপড়া শেষ করেই চাকরির জন্য হন্যে হয়ে সোনার হাতি খোঁজা। যদিও এ দৌড়ে সবাই এগিয়ে থাকতে পারছে না। তবে কারো কিন্তু চেষ্টার ত্রুটি নেই।
চাকরি আপনাকে যা থেকে বঞ্চিত করেছে তা শুনলে আঁতকে উঠতে পারেন। চাকরি আপনার সৃজনশীল সৃষ্টির ক্ষমতাকে গলাটিপে হত্যা করেছে। আপনার মধ্যকার উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনাকে ৯টা-৫টার যাঁতাকলে ফেলে বড় হওয়ার স্বপ্নভঙ্গ করেছে। যেখানে আপনি নিজেই নিজের বস হতে পারতেন, সেখানে আপনাকে অন্যের চাকর করেছে। আপনার ভেতরে জেগে ওঠার ক্ষমতাকে দাসত্বে পরিণত করেছে। আপনার যে ছোট্ট শিশুটি বাবা বাবা বলে আপনাকে কাছে পেতে চায় তাকে অতৃপ্ত করেছে।
নিশ্চিত কিছুর জন্য থাকলে তো অনিশ্চিতের সম্ভাবনা থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন-এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই ভাবেন, আর চাকরি-বাকরি করব না। এবার নিজেই কিছু একটা করব। কিন্তু বের হয়ে আসতে পারেন না সেই নিরাপত্তার বৃত্ত থেকে। আবার অনেকেই বলেন, চাকরির জীবন শেষে পেনশনের টাকা দিয়ে শুরু করে অল্প দিনেই সেরা ধনী হয়ে যাব। কিন্তু তাদের দৌড় কত দূর? লাইফের ত্রিশটি বছরের যৌবন তো চাকরি আপনার কাছ থেকে নিয়েই নিয়েছে। আপনার শক্তি, সামর্থ্য, মেধা, সময় কোনোটাই চুষে নিতে ভুল করেনি আপনাকে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। আপনাকে যদি বিশ হাজার টাকা বেতন দিয়েছে তো তার বিপরীতে আপনাকে দিয়ে দুই লাখ টাকা আয় করে নিয়েছে।
জীবনটা চামচে মার্বেল রেখে দৌড় খেলার মতোই। আপনি দৌড়ে প্রথম হলেও চামচ থেকে মার্বেল পড়ে গেলে আপনার অর্জন শূন্য। জীবনের উচ্ছ্বাস-উত্তেজনা, অনুভূতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে দাসত্ব থেকে আপনাকে মুক্ত হতে হবে। জ্বালানিবিহীন গাড়ির মতো গতিহীন জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে ইঁদুরের গর্তে মুখ লুকিয়ে থাকা অনেক ভালো। নিরপত্তার জন্য সম্ভাবনাকে হত্যা করার কী দরকার। চেষ্টা করেই দেখুন। আপনার চেষ্টা আপনাকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দরজা খুলেই রেখেছে।
"