কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামে তিন দিনে কুকুরের কামড়ে আহত অর্ধশতাধিক
কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে কুকুর আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত তিন দিনে ৫০ জনসহ এক সপ্তাহে শিশুসহ দেড় শতাধিক মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হয়েছে। জেলার সদর, উলিপুর, রাজারহাট, ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে শুধু কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১২২ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার ছোট-বড় বাজার ও শহরগুলোয় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিনে ধরে সরকারিভাবে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে তিন দিন আগে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়াতে শুরু করলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে গত ২৯ মে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকায় একটি পাগলা কুকুড়ের কামড়ের শিকার হন শিশুসহ প্রায় ২০ জন।
হাসপাতালে পৌরসভার বানিয়াপাড়া গ্রামের সুজা মিয়া, বাসস্ট্যান্ডপাড়ার আবদুল হাকিম, শাহীন জানান, ‘আমরা রাস্তায় চলার সময় হঠাৎ করে দুই থেকে তিনটি কুকুর একসঙ্গে এসে আক্রমণ করে কামড় বসিয়ে চলে যায়। এখন বাধ্য হয়ে সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে এসেছি।’ এদিকে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকাসহ উপজেলাগুলোয় কুকুরের আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় স্থাবির হয়ে গেছে সাধারণের হাঁটা চলাচল। কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র আবদুল জলিল পৌর এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। আমরা শিগগিরই একটা ব্যবস্থা নেব।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ভ্যাকসিন কর্নারের ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিনে শিশুসহ ১২২ জনকে র্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ জন নতুন করে কুকুরের কামড়ের শিকার। তাদের মধ্যে যাদের ক্ষত বেশি হয়েছে, তাদের র্যাবিস ভ্যাকসিনের সঙ্গে র্যাবিস আইজিও দেওয়া হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ভ্যাকসিন কর্নারের ইনচার্জ জানান, হাসপাতালে র্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ থাকলেও র্যাবিস আইজিও সরবরাহ নেই। ফলে আক্রান্তরা এই ভ্যাকসিনটি বাইরে থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যার প্রতিটির মূল্য এক হাজার টাকা। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। যেহেতু কুকুর নিধন করা নিষেধ সেহেতু কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
"