কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দখল হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কুয়াকাটার খাস পুকুর
পর্যটন নগরী কুয়াকাটার এলজিইডি গেস্ট হাউসের সম্মুখের খাস পুকুর দখল করে তোলা হচ্ছে দোকানঘর। পুকুরটির মহাসড়ক লাগোয়া পাড় থেকে দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রকাশ্যে ঐতিহ্যবাহী এ খাস পুকুর এভাবে দখল হলেও কুয়কাটা পৌর প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় পর্যটকসহ জনমনে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
অভিযোগ রয়েছে, দলীয় প্রভাব ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ইতোমধ্যে স্থানীয় জাকির, রব, মামুন এবং আনোয়ার চারটি দোকানঘর তুলেছেন। কুয়াকাটায় আসা পর্যটক-দর্শনার্থীসহ সাধারণ পৌরবাসী এবং সংলগ্ন স্কুলের শিক্ষার্থীসহ মসজিদের মুসল্লিদের ব্যবহারের একমাত্র পুকুরটির দখলসহ সৌন্দর্যহানির এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। এই পুকুরের পানি কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা সাগরে গোসল শেষে একটু ফ্রেশ হওয়াসহ স্থানীয়দের রান্নাকাজে ব্যবহারসহ গোসল করে। এখন এ সুবিধা থেকে বঞ্চিতের শঙ্কায় পড়েছেন পর্যটকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিটিশ আমলে যখন আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায় কুয়াকাটায় বসতি স্থাপন শুরু করে, তখন সুপেয় পানির জন্য এ পুকুরটি খনন করা হয়। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ পুকুরের একসময় নিয়ন্ত্রণ ছিল রাখাইনদের হাতে। তখন পুকুরের পানি ব্যবহারে শর্ত ছিল। কেউ পুকুরে নেমে গোসল করত না। পরে রাখাইনদের নিয়ন্ত্রণহারা হয় পুকুরটি। জনস্বার্থে এবং পর্যটকের ব্যবহারের সুবিধার্থে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ একটি ঘাটলা নির্মাণ করে দেয়। জানা যায়, এর আগে এটি দেখভালের জন্য দায়িত্ব ছিল উপজেলা প্রশাসনের হাতে। বর্তমানে এটি কুয়াকাটা পৌরসভার হাতে ন্যস্ত হয়েছে। সম্প্রতি সড়ক ও জনপদ বিভাগ পুকুরটির সংরক্ষণসহ পাড় বাঁধাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে।
মহিপুর উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখাসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লোক পাঠানো হচ্ছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর রহমান জানান, পুকুর দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, কুয়াকাটার ঐতিহ্যবাহী পুকুরের সৌন্দর্যবিনষ্টকারী দখলদারদের খুব দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে।
"