পঞ্চগড় ও মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
পঞ্চগড় ও মনোহরদীতে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি : আহত ২০
পঞ্চগড়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় দফায় শিলাবৃষ্টিতে উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে নাবী টমেটো চাষিদের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ওই শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড় জেলার প্রায় ২৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কৃষকদের দাবি, ক্ষতিগস্ত জমির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। এদিকে নরসিংদীর মনোহরদীতে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ অন্তত ২০ নারী-পুরুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পঞ্চগড় প্রতিনিধিকে কৃষকরা জানান, শুক্রবার বিকেলে থেকে আকাশ ভারী হতে শুরু করলেও সন্ধ্যার দিকে শুরু হয় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের উত্তর দিক থেকে শুরু করে হাড়িভাসা ও চাকলাহাট ইউনিয়ন হয়ে শিলাবৃষ্টি চলে যায় ভারতের দিকে। তাই ক্ষতিও হয়েছে অনেক বেশি। এই শিলাবৃষ্টিতে হাইব্রিড টমেটো, ভুট্টা, মরিচ, তরমুজ, বাদামসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় টমেটো ক্ষেত। টমেটো গাছ থেকে সব টমেটো ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। সেই সঙ্গে গাছের ডালপালা ভেঙে মাটিতে শুয়ে পড়ে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতরের উপপরিচালক মো. শামছুল হক বলেন, দ্বিতীয় দফায় শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে ২৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমির নাবী টমেটো, ৫ হেক্টর জমির তরমুজ এবং ৫ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষেত। ভুট্টা ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন পাতা আসলে কোনো সমস্যা হবে না।
মনোহরদী প্রতিনিধি জানান, শনিবার বিকেলে হঠাৎ করেই ঝড়ের সঙ্গে বরফের মতো শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে এই ঝড়ো হাওয়া ও ভারী শিলাবৃষ্টি হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খিদিরপুর, চরমান্দালিয়া, কৃষ্ণপুর, বড়চাপা, চালাকচর ও লেবুতলা ইউনিয়ন। এতে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, শিলাবৃষ্টির কারণে ছয়টি ইউনিয়নে ৩১০ হেক্টর বোরো ধান, ১৭০ হেক্টর কলা, ৯০ হেক্টর পান, ৩০ হেক্টর সবজি, ৫ হেক্টর লেবুসহ ১১৫০ হেক্টর আক্রান্ত জমি আক্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কাঁচাঘর-বাড়িরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রশাসক ডা. মো. শফিকুল আলম বলেন, শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. লতাফত হোসেন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমি এবং অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) ড. সাফায়েত হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধাণের চেষ্টা চলছে।’
"