আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২১ আগস্ট, ২০১৮

যৌন হামলা ঠেকাতে অভিনব জ্যাকেট

যৌন হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে মেক্সিকোর চার শিক্ষার্থী মিলে একটি জ্যাকেট উদ্ভাবন করেছেন। এই জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় থাকলে কেউ যখন তার ওপর হামলা চালাতে আসবে তখন জ্যাকেটের হাতা থেকে হামলাকারীর গায়ে বৈদ্যুতিক শক লাগবে বলে জানানো হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা যে শহরে আছেন সেখানে ধর্ষণের মতো যৌন হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণে তারা এ রকম একটি জ্যাকেট তৈরি করতে উৎসাহিত হয়েছেন।

তারা বলেন, এই বৈদ্যুতিক শকের তীব্রতা এতটাই কম যে এর ফলে জ্যাকেটটিকে কোনো ধরনের অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তবে এর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের যৌন হামলা ঠেকানো সম্ভব হবে। পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি এই জ্যাকেটের নাম দেওয়া হয়েছেন ওমেন ওয়েরাবেল। প্রকৌশল, আইন ও রোবটিক্স বিভাগের চার শিক্ষার্থী মিলে এটি তৈরি করেছেন। ওই শিক্ষার্থীরা সবাই পুয়েবলা শহরের মন্টেরি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড হায়ার এডুকেশনে পড়াশোনা করছেন। নতুন নতুন পণ্যের বাণিজ্য নিয়ে ক্লাসে পরীক্ষামূলক কাজের অংশ হিসেবেই তারা এটি উদ্ভাবন করেছেন। শিক্ষার্থীদের একজন পারা কুইরোজ বলেন, আমাদের অনেক বান্ধবী এবং পরিচিতদের কাছে শুনেছি যে তাদের ওপর নানা ধরনের যৌন হামলা চালানো হয়েছে। এ ধরনের সহিংসতার ওপর কিছু গবেষণার পর আমরা এই জ্যাকেটের ধারণা নিয়ে এসেছি। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পুয়েবলা শহরে প্রতিদিন প্রায় তিনটি করে যৌন হামলার ঘটনা ঘটছে।

শিক্ষার্থীরা প্রথমে সুতার তৈরি একটি ট্র্যাক সুট কিনে আনেন। তারপর তার লাইানিং-এর ভেতরে ৯ ভোল্টের একটি ব্যাটারি, একটি ট্রান্সফরমার এবং কিছু তার ঢুকিয়ে দেন। এগুলো এমনভাবে পেঁচানো অবস্থায় থাকে যে যিনি এই জ্যাকেট পরবেন তার গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে না। বিদ্যুৎ চালু ও বন্ধ করার জন্য সেখানে একটি সুইচ বা বোতাম লাগানো আছে। আছে একটি এলইডি বাতিও। রোবটিক্সের শিক্ষার্থী গিওয়ান পার্ক সার্কিটের নকশা তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, জ্যাকেটের একটি বোতামের মাধ্যমে এর ভেতরে বিদ্যুৎ চালু করা হয়। লাইট জ্বলে উঠতে বুঝতে হবে যে নিজেকে রক্ষা করার জন্য জামাটি তৈরি হয়ে গেছে। এ রকম অবস্থায় যখন কেউ জ্যাকেটের হাতার ইলেকট্রোডকে স্পর্শ করবে তখন সার্কিটটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং যিনি স্পর্শ করবেন তার গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে। তখন হামলাকারী হতভম্ব হয়ে যাবেন এবং তখনই নির্যাতিত নারী দৌড়ে পালাতে পারবেন এবং তিনি যে হামলার শিকার হয়েছেন সেটা তিনি আশপাশের লোকজনকে জানানোর সুযোগ পাবেন। আইনের শিক্ষার্থী গুয়াদালোপ মার্তিনেজ বলেন, এর ফলে আইনের লঙ্ঘন হবে না। কারণ এটি আত্মরক্ষার একটি হাতিয়ার।তিনি বলেন, এখানে বৈদ্যুতিক শকের মাত্রা খুব কম। এর ফলে কারো জীবনের ওপর হুমকি তৈরি হবে না।

আর এ কারণে এই জ্যাকেটটি কোনো ধরনের অস্ত্র হিসেবেও বিবেচিত হবে না।

পরীক্ষামূলকভাবে এই জ্যাকেটটি তৈরি করতে সময় লেগেছে তিন মাসের মতো। উদ্ভাবক শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা এটিকে আরো কিছুটা উন্নত করতে চান। এতে সেন্সর লাগাতে চান। চান জ্যাকেটের হাতা ছাড়াও অন্যান্য জায়গাতেও ইলেকট্রোড বসাতে।

তারা বলছেন, এই প্রযুক্তি হয়তো পরে ব্লাউজ, স্কার্ট এবং ট্রাউজারের মতো পোশাকেও লাগানো যেতে পারে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা প্রায় ৫০ ডলার দামে তাদের তৈরি এই জ্যাকেট বিক্রি করবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close