reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ মার্চ, ২০১৯

নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার চান ইসি মাহবুব তালুকদার

নির্বাচনকে অর্থবহ ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নিজের মত তুলে ধরেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য এবং গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কী পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে, সেটা বর্তমানে সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে সব দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে—এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত হলে ভোটারদের উপস্থিতি জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচন কেমন হয়েছে, প্রতিটি বিবেকবান মানুষের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর আছে। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত তারা কখনও এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দেবেন না। জাতীয় নির্বাচন কেবল রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা বদল নয়, এতে গণতন্ত্র কতটা সমন্বিত হলো তাও বিবেচনাযোগ্য।

অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় উপজেলা নির্বাচন জৌলুস হারিয়েছে এবং একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাহবুব তালুকদারের ভাষ্য, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয়ভাবে। এই নির্বাচনের স্বরূপ তাহলে কেমন দাঁড়ায়? অন্যদিকে এই নির্বাচনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। এজন্য উপজেলা নির্বাচনের জৌলুস নেই। একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এমন নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে, নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? ইংরেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইলেক্টেড না বলে সিলেক্টেড বলা যেতে পারে কি? এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তি চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। পরবর্তীতে আরও ৫০ জন সম্ভবত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নির্বাচন পদ্ধতি,সংস্কার,মাহবুব তালুকদার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close